কলকাতা: আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভাইরাল ভিডিও ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দলীয় কার্যালয়ে বসে রয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। সেই ফাঁকে, বসা অবস্থায় আহত (বাঁ) পায়ের ওপর ডান পা রাখলেন তিনি। আবার, কখনও আহত পা দোলাতেও দেখা যায় মমতাকে। সোশ্য়াল মিডিয়ায় বহুল শেয়ার হওয়া এই ভিডিওটির সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি এবিপি লাইভ।


বিজেপি নেতা প্রণয় রায় নিজের ফেসবুক পেজে ওই ভিডিওটি শেয়ার করে লেখেন, "আমি জ্যোতিষী নই। কিন্তু একাধিক টিভি চ্যানেল এ অনেক আগেই আমি বলেছিলাম নন্দীগ্রামের ভোট হয়ে গেলেই পা ঠিক হয়ে যাবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে ছবিটি। উনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। একটাই অনুরোধ যারা নিজেদের যোগ্যতায় পুলিশের চাকরি পেয়েছে তাদের অন্তত wheel chair ঠেলিয়ে কষ্ট দেবেন না। আমার পরিচিত অনেক বন্ধু পুলিশে চাকরি করে। খারাপ লাগে যখন দেখি শিক্ষিত হয়েও কেবলমাত্র চাকরি রক্ষার কারণে মুখ বুজে অপমান সহ্য করতে হয়।"


 



 


তৃণমূলের তরফ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এটা অত্যন্ত কুরুচিকর। যে জায়গায় আঘাত, তার ওপর কোনও চাপ নেই। এটাকে নিয়ে যারা রাজনীতি করছে, তা অত্যন্ত নিম্নরুচির না হলে এটা করা সম্ভব নয়। অনেক সময় হাঁটু ধরে যায়। অনেক ক্ষেত্রে সামান্য অনুভূতির জন্যও সঞ্চালন করার প্রয়োজন হয়।


গেরুয়া শিবিরকে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন কুণাল। বলেন, বিজেপির লোকেরা মমতার পায়ের দিকেই তাকিয়ে আছে। মনপ্রাণ দিয়ে যদি পায়ের দিকেই তাকিয়ে থাকবে, একেবারে পায়ে এসে পড়ুক না! বিজেপি এত মা কালী করে বেড়াচ্ছে। ওরা কি একটা গান জানে? কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোক নাচন...।  বিজেপি আলো খুঁজছে মমতার পায়ে।


এখানেই থেমে না থেকে তিনি যোগ করেন, আমার মনে হয়, বিজেপি একটু সুস্থ রাজনীতি করুক। একেবারে যেগুলির সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই, যে মহিলাকে আহত করা হয়েছে, এবং আস্তে আস্তে তিনি সুস্থ হচ্ছেন, তিনি পা বাঁচিয়ে প্রচারে রয়েছেন। তার মধ্য়েই তাঁরা যদি এধরনের কুৎসিত পোস্ট করেন, তাহলে মানুষ বিচার করবেন এদের এই দেউলিয়া রাজনীতি। 


১০ মার্চ নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে জনসংযোগের সময় আহত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় হয়। 


ব্যথা বাড়তে থাকায় তাঁকে কলকাতায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। পায়ে প্লাস্টার করা হয়। সেদিন ঘটনার পরই প্রথমে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকল্পনামাফিক গোটা ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেত্রীর। সহানুভূতি আদায়ের জন্যই এসব করেছেন বলে দাবি করে বিজেপি।


যদিও, চাপানউতোরের আবহেই দুর্ঘটনার তত্ত্বে সিলমোহর দেন ২ পর্যবেক্ষক। কমিশনে তাঁরা যে রিপোর্ট জমা দেন, তাতে উল্লেখ করা হয়, নন্দীগ্রামে দুর্ঘটনায় আহত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পিছনে পরিকল্পনা করে হামলার কোনও বিষয় নেই।