সুনীত হালদার, হাওড়া: খাবার বিলি করে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠল একাধিক জায়গায়। হাওড়ার জগত্বল্লভপুরে তৃণমূল ও বিজেপি, দুই দলের তরফে আলাদাভাবে খাওয়ানো হল লুচি আলুরদম। বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রে একটি বুথের বাইরে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস থেকে খাওয়ানো হল ছোলা-মুড়ি। ক্যানিং পশ্চিমে খাওয়ানো হল মুরগির মাংস-ভাত।
১৯৭৭-এ জনতা পার্টির সরকারের আমলে শুরু হয়েছিল ফুড ফর ওয়ার্ক বা কাজের বদলে খাদ্য প্রকল্প। ২০২১-এ বঙ্গের বিধানসভা ভোটে অন্তত দুটি কেন্দ্রে যা ঘটল তাকে অনায়াসেই বলা যায় ফুড ফর ভোট! কোথাও মুরগির মাংস-ভাত, কোথাও ছোলা মুড়ি, আবার কোথাও লুচি-আলুরদম খাইয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠল। হাওড়ার জহত্বল্লভপুর বিধানসভার জাবদাপোতা গ্রামে দেখা গেল বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে একটি বাড়িতে তৃণমূলের তরফে আয়োজন করা হয়েছে রান্নার।
লুচি ভাজা হচ্ছে। রান্না হচ্ছে আলুরদম। আর তা প্যাকেটবন্দি হয়ে চলে যাচ্ছে ভোটারদের হাতে। এতে অন্যায় কিছু দেখছেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতা শান্তি নাথ। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছরই ভোটের সময় খাওয়া দাওয়ার বন্দ্যোবস্ত করা হয়। ইদানীং লুচি আলুরদম করা হয়েছে। আগে ছোলা মুড়ি দেওয়া হত।’’
ভোটারদের খাওয়ার বন্দোবস্ত করা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। একই জায়গায় পাশেই আর একটি বাড়িতে বিজেপির তরফেও লুচি আলুরদমের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সুরেশ কাঞ্জি, সভাপতি, বিজেপি, ১৭৩ নং জাবদাপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথ বলেন, ‘‘এটা এখানে প্রতিবছরই হয়। আমরাও করি। এবারও করছি।’’
ঘটনাস্থলে মোতায়েন পুলিশ সূত্রে দাবি, কেউ অভিযোগ করেনি, তাই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। আর তা ছাড়া রান্না হচ্ছে বাড়ির ভিতরে। একই ছবি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে পূর্ব নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ৪, ৫, ৬ ও ৬ এ বুথ এলাকায় তৃণমূলের ক্যাম্প অফিসের পাশে মুরগির মাংস ও ভাত খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করা হয়। নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটার জাহিরুল সর্দার বলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেক ভোটে খাবার দেয়। লকডাউনে সাহায্য করেছে। এবারও ভোটের সময় খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছে।’’
নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় তৃণমূল নেতা মোশারফ মোল্লা বলেন, ‘‘ভোট বলেই খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি।’’
একই ছবি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে। চক্রবর্তী আবাদ এলাকায় তৃণমূলের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে বিলি করা হয় ছোলা মুড়ি। দক্ষিণ ২৪ পরগনারই বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের চক্রবর্তী আবাদ এলাকায় তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস থেকে ছোলা মুড়ি বিলি করা হয়।
পরে পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম গিয়ে তৃণমূলের ক্যাম্প থেকে ছোলা মুড়ি বিলি বন্ধ করে দেয়।