সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: প্রচারে বেরিয়ে টাকা দিচ্ছেন রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপির প্রার্থীর অনুগামী। ট্যুইটারে ভিডিও পোস্ট করে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ফেক ভিডিও। পাল্টা দাবি রাজ্য বিজেপির। হাতখরচের জন্য টাকা দিতেই পারে। সাফাই দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।


পুরশুড়ায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,‘‘টাকার বিনিময়ে বড় বড় কথা, গুচ্ছ গুচ্ছ টাকা ছড়াচ্ছে৷’’ নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রায় প্রত্যেক জনসভাতেই বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটে টাকা ছড়ানোর অভিযোগে সরব হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  


আর এই প্রেক্ষাপটেই ট্যুইটারে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর পোস্ট করা একটি ভিডিও ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে চাঞ্চল্য। তৃণমূল সাংসদের পোস্ট করা ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী যখন বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করছেন, তখন তাঁরই এক অনুগামী এক মহিলার হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন। 


ওই ভিডিওতে বিজেপি প্রার্থীর অনুগামীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "আপনি অ্যারেঞ্জ করুন, স্যার যতক্ষণ বলেছেন, আপনার চিন্তা নেই। আপনার চিন্তা নেই। ঠিক আছে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এটা দিয়ে দিলাম। আর এর জন্য আমরা চেষ্টা করব ঠিক আছে। আমরা চেষ্টা করছি।" ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।


ভিডিওটি পোস্ট করে মহুয়া মৈত্র ট্যুইটারে লিখেছেন, যদি এটা সত্যি হয়, তাহলে চমকে দেওয়ার মতো ভিডিও। রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী এবং তাঁর অনুগামীরা বাড়ি বাড়ি টাকা বিলি করছেন। ‘ঘর ঘর মোদি’র যথার্থ সারমর্ম! ট্যুইটটি নির্বাচন কমিশনকে ট্যাগ করে ঘটনার তদন্ত এবং দ্রুত পদক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছেন মহুয়া মৈত্র। আর এদিনই এ নিয়ে সোনারপুরের জনসভা থেকে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের টাকা মানুষকে দিয়ে বলছে আমরা দিচ্ছি। মহুয়া আমাকে ছবি পাঠিয়েছে, দেখা যাচ্ছে এক বিজেপি প্রার্থী টাকা দিচ্ছেন।’’


বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব এই ভিডিওকে ভুয়ো বলে দাবি করলেও, যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই বিজেপি প্রার্থীর গলায়  আবার ভিন্ন সুর! রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফেক ভিডিও, মানুষ সব বোঝে এগুলি। হেরে যাবে জেনে এসবগুলিকে আকড়ে ধরতে চাইছে।’’


রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী বলেন, ‘‘এটা সর্বব মিথ্যা কথা, কেউ যদি কাউকে ২০০ বা ১০০ টাকা হাতখরচের জন্য বা ফল কেনার জন্য দেয়, সেটা দিতেই পারে। বিগত ১০ বছরে কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছে, এখন মানুষের কাছে অল্প কিছু পৌঁছে দিচ্ছে। আমরা সেই পন্থায় যাই না।’’


ভোটের আগে টাকা বিলি নিয়ে অবশ্য বিতর্ক এই প্রথমবার নয়। গত সপ্তাহে ভাইরাল হয়েছিল এই ভিডিও। যেখানে দেখা গিয়েছিল, ঝাড়গ্রামের বিজেপি প্রার্থী সুখময় শতপথি প্রচারে বেরিয়েছিলেন। আর তাঁর পাশে থাকা এক অনুগামীকে বলতে শোনা গিয়েছিল এই কথা ৷ সম্প্রতি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁন্ধী একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেন, অসমের করিমগঞ্জে ভোটের পর স্ট্রং-রুমে ইভিএম পৌঁছতে খোদ বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে।


যদিও কোনও অভিযোগকেই গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির।