রাজর্ষি দত্তগুপ্ত ও অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা ও নন্দীগ্রাম: হলদিয়া নয়, এবার তিনি যেখানে প্রার্থী, সেই নন্দীগ্রামের ভোটার হলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। নতুন এপিক কার্ড অনুযায়ী এখন তিনি নন্দীগ্রামের বাসিন্দা। সেই হিসেবেই মনোনয়ন জমা দিলেন আজ। আরও উসকে দিলেন ভূমিপুত্র আবেগ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর হলদিয়া ছেড়ে নন্দীগ্রামের ভোটার হওয়ার রাজনৈতিক কৌশলকে অবশ্য প্রকাশ্যে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।


‘বাংলার মেয়ে’ বনাম ‘বহিরাগত’, এই তত্ত্বে রাজ্যে এবার ধুন্ধুমার লড়াই। নন্দীগ্রামে সেই লড়াই আরও উঁচু তারে বাঁধা-‘বাংলার মেয়ে’ বনাম ‘ভূমিপুত্র’। নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘শীতকালে যেমন ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা ফোটে, এ বার তেমন বহিরাগতরা আসছে নন্দীগ্রামে। এদেরক একটিও ভোট দেবেন না।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর পাল্টা বলেছিলেন, ‘আমি বাইরের লোক হয়ে গেলাম! যাঁরা গুজরাত থেকে আসছেন, রাজস্থান থেকে আসছেন, তাঁরা বাংলার লোক হয়ে গেলেন? আমাকে বহিরাগত বলছে !’


‘ভূমিপুত্র’ বনাম ‘বহিরাগত’ বাগযুদ্ধের মধ্যেই বদলে গেল শুভেন্দু অধিকারীর ঠিকানা। আজ নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী হলদিয়ায় মনোননয়ন জমা দিলেন নন্দীগ্রামের ভোটার হিসেবে।


হলদিয়া মহকুমার অন্তর্গত নন্দীগ্রাম। এতদিন পুরনো এপিক কার্ড অনুযায়ী শুভেন্দু অধিকারী হলদিয়ার ভোটার ছিলেন ৷ নতুন এপিক কার্ড অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরের ‘ভূমিপুত্র’ এখন নন্দীগ্রামের ভোটার। ৫১ বছর বয়সি এই বিজেপি নেতার নতুন এপিক কার্ডে তাঁর ঠিকানা হিসেবে লেখা হয়েছে নন্দনায়কবাড়, নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর ৷ গত ৬ মার্চ ইস্যু হয়েছে এই এপিক কার্ড। তার ৬ দিনের মাথায় নন্দীগ্রামের বাসিন্দা হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘আমি তো এখানকারই ছেলে। অসুবিধার কী আছে?’


এপিক কার্ডের ঠিকানা অনুযায়ী, নন্দীগ্রামের নন্দনায়কবাড় প্রাইমারি স্কুলে এবার শুভেন্দু অধিকারীর বুথ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তিনিও নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে বাড়িভাড়া নিয়েছেন।


বিষয়টিকে প্রকাশ্যে অন্তত গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘মমতার হাত ধরেই শুভেন্দুর উত্থান। মমতার ছবি ধরেই যা কিছু করেছে। এবার বুঝতে পারবে। ওর মস্তিষ্ক বিকৃতি হয়েছে।’


পুরনো মাঠে নতুন জার্সিতে পুরনো প্লেয়ার শুভেন্দু অধিকারী। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভোটার কার্ড বদল তাঁকে কোনও অ্যাডভান্টেজ দেয় কিনা, ২ মে ইভিএম খোলার পরই তা বোঝা যাবে।