বীরভূম: ভোটের মুখে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল বীরভূমের সাঁইথিয়া ও ময়ূরেশ্বরে। সাঁইথিয়া থানার আমোদপুর ফাঁড়ি এলাকার শিওড় গ্রামের পুকুর পাড় থেকে ৩টি তাজা বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। খবর দেওয়া হয় বম্ব স্কোয়াডকেও। ময়ুরেশ্বর বিধানসভার রংতাড়া গ্রামে বিজেপির বুথ সভাপতি জগন্নাথ চক্রবর্তীর বাড়ির দেওয়ালে প্লাস্টিকের ব্যাগে ২টি তাজা বোমা রেখে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। আজ, বুধবার সকালে বিজেপি নেতা এই ঘটনা দেখে ময়ূরেশ্বর থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে বোমা উদ্ধার করে। বিজেপি নেতার অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


এদিকে ভোটের ঠিক মুখে কলকাতার চিত্‍পুর এলাকা থেকে ১৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করল পুলিশ।  দিলারজং রোডে একটি পাঁচিলের আড়ালে প্লাস্টিকের বস্তায় রাখা ছিল ১৫টি তাজা বোমা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ সেগুলি উদ্ধার করে বলে জানা গিয়েছে ৷




আগামিকাল, বৃহস্পতিবার রাজ্যে বিধানসভার অষ্টম তথা শেষ দফার ভোট ৷ অষ্টম দফার ভোটে থাকছে মোট ৬৪১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। কলকাতায় ভোটে মোতায়েন থাকছে ৯৫ কোম্পানি বাহিনী। বীরভূমে থাকছে ২২৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। মালদায় থাকছে ১১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং মুর্শিদাবাদে থাকছে ২১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।


নির্বাচন কমিশনের ‘নজরবন্দি’ রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ৩০ এপ্রিল সকাল ৭টা পর্যন্ত ‘নজরবন্দি’। বীরভূমে ভোটের আগে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের। ২৯ এপ্রিল শেষদফায় ভোট বীরভূমে। 


একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বলে জানা গিয়েছে ৷ নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ভিডিওগ্রাফি করা হবে। নজরদারিতে থাকবেন বাহিনীর জওয়ানরা। বীরভূমের জেলা সভাপতির সঙ্গে থাকবেন একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। 


উল্লেখ্য, "এর আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোট, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় নজরবন্দি করা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। এ বিষয়ে বীরভূম জেলা সভাপতি বলেন, নজরবন্দি মানে কি গৃহবন্দি না কি? নজরবন্দি মানে তো আমার সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং জওয়ানরা থাকবেন। আমি যেখানে যেখানে যাব আমার সঙ্গে তাঁরা যাবেন।" পাশাপাশি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই তিনি বললেন, "খেলা হবে।"  


অনুব্রত মণ্ডলের নজরদারি নিয়ে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "প্রত্যেকবার ভোটের আগে অনুব্রতকে নজরবন্দি করে রেখে দেওয়া হয়। এটা ঘোরতর অপরাধ। ওঁকে বলেছি এইবার এরকম কিছু হলে তুমি আদালতে যাবে। নিরাপত্তা নেবে।"


নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি। এবিষয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "অনুব্রত মণ্ডলের যা কথার ধরণ তাতে উনি বাইরে থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এমনকী পুলিশ প্রশাসনও কাজ করতে পারবে না। উনি দাঁড়িয়ে বলছেন পুলিশকে বোম মারো। সেই ব্যক্তি বাইরে থাকলে নির্বাচন প্রভাবিত হবেই।"