রানাঘাট: ভোটের প্রচারে শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর আরও চড়ালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রানাঘাটের জনসভায় তৃণমূল নেত্রী চতুর্থ দফার ভোটের দিন শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালনায় ফের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করলেন তিনি। সেইসঙ্গে তদন্তের আগেই গুলি চালনার ঘটনায় ক্নিনচিট দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও সমালোচনা করেছেন।   নাম না করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্যেরও তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 



তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, শীতলকুচির ঘটনা পরিকল্পিত। এসপি-র সঙ্গে বসে প্ল্যান করেছে বিজেপি। 



মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ওই ঘটনার তদন্ত করবই। তদন্তে আসল ঘটনা বের করব। কীভাবে একটা মেয়েকে আগে পাঠিয়ে তাকে বলতে বলা হয়েছিল, আমার বাচ্চাকে লুঠ করে নিয়ে গেছে। তারপর প্ল্যান অনুযায়ী গুলি চালানো হয়।



তৃণমূল নেত্রী বলেছেন,যারা গুলি চালিয়েছিল, তাঁদের নাম সব আমি বের করেছি, আমি ছেড়ে কথা বলব না এই কেসটাতে, আমাকে বোকা ভাববেন না।টোটালটা প্যানিং করেছেন অমিত শাহ।



গতকাল দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, শীতলকুচিতে দুষ্টু ছেলেরা মরেছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।



নাম না করে দিলীপ ঘোষের ওই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন মমতা। তিনি বলেছেন, এই পার্টিকে ব্যান করা উচিত, বিজেপির সভাপতি বলছে গুলি চালিয়ে দাও।



মমতা বলেছেন, বিজেপির লোকটা কি করেছে, ভিডিওতে দেখেছেন তো? আমি তো দেখেছি।বিজেপি মনে করে রাজনীতি মানে গুলি চালানো।


বিজেপি বলছে চারটে লোক না মেরে আটটা লোককে মেরে ফেলা উচিত ছিল।রাজনৈতিকভাবে এদের বয়কট করা দরকার। 



গতকাল অমিত শাহ অভিযোগ করেছিলেন, শীতলকুচিকাণ্ডে তোষণের রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪ জনের মৃত্যু নিয়ে সরব হলেও, আনন্দ বর্মনের মৃত্যু নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করলেন না কেন? এই প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।



এদিন রানাঘাট জনসভায় এই প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন,বিজেপি নিজে নিজের কর্মীকে মেরেছে, সকালে রাজবংশী ছেলেটাকে মেরেছে। 



শীতলকুচিতে নিহত তরুণের পরিবারকেও সাহায্য করবেন বলে জানিয়ে মমতা বলেছেন, ওই ঘটনার আগের রাতে এক রাজবংশী নেতার মাথা ফাটিয়ে দেয় বিজেপি। 



মমতা বলেছেন, ভোট পেতে বিজেপি হিন্দু-মুসলমান করছে। অসমে এনআরসি-তে যখন ১৪ লক্ষ মানুষকে বাদ দেওয়া হয়, তখন  মনে পড়েনি তাঁরা হিন্দু। 



মমতা বলেছেন, এরা নিজের গাড়ি নিজে ভাঙবে, নিজেরা নিজেদের চরিত্র হনন করবে, তারপর ভোট চাইবে। 



মমতা বলেছেন, রোজ বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের অনুপ্রবেশকারী বলেন। এখন  মতুয়াদের ভোট চাইছেন। ভোট চাইতে বাংলাদেশে চলে গিয়েছিলেন। 



মমতা বলেছেন, আমি আপনাদের পাহারাদার, আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসি না, এক টাকা বেতন নিই না। আপনারা কি চান বাংলা গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ হয়ে যাক? বহিরাগতদের হাতে চলে যাক?আজ বাংলা মাকে বাঁচাতে হবে। আমরা ছদ্মবেশি ধর্ম করি না।



মমতা বলেছেন, কোভিডের সময় বিজেপি কোথায় থাকে? তোমরা বসন্তের কোকিল।



তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, নির্বাচনে বিজেপি গো হারা হারবে, বাংলা বাংলায় থাকবে।



শীতলকুচির ঘটনার পর কোচবিহার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেছেন, গুলি করে মারল চারজনকে, তারপর যেতে দিচ্ছে না... এত ভয়! ওদের ১ লক্ষ নেতা এখানে বসে আছে...আমার জন্য।