কলকাতা: সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, কমিশনের নোটিস। নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব তলব করেছে কমিশন। মমতার বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ মুখতার আব্বাস নকভির।গত ৩ এপ্রিল, তারকেশ্বরের সভায় সংখ্যালঘু ভোট ভাগ প্রসঙ্গে বিজেপিকে আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। তারই প্রেক্ষিতে কমিশনে নালিশ জানায় বিজেপি।
ওই সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হায়দ্রাবাদ থেকে বিজেপির এক বন্ধু এসেছে। ফুরফুরা শরিফের একটা চ্যাংড়াকে নিয়ে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে কমিউনাল স্লোগান দিচ্ছে আর হিন্দু-মুসলমান ভাগ করার চেষ্টা করছে। ওদেরকে একটা ভোটও দেবেন না। ওদের একটা ভোট দেওয়া মানে বিজেপি-কে দেওয়া। আমি সংখ্যালঘু ভাইবোনেদের কাছে হাত জোড় করে বলছি, বিজেপির কাছ থেকে যে শয়তানরা টাকা নিয়েছে তাদের কথা শুনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করবেন না।“
তারকেশ্বরে নির্বাচনী জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানায় বিজেপি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূল নেত্রীকে নোটিস পাঠালো কমিশন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে কমিশনের মনে হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। তাই তাঁকে এই নোটিস পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে হবে। নইলে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে।
মঙ্গলবারই তৃতীয় দফার ভোটের দিন, রাজ্যে এসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সম্পর্কে তৃণমূল নেত্রী করা মন্তব্যের প্রসঙ্গে সরব হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এও বলেছিলেন, তিনি হিন্দুদের নিয়ে কোনও কথা বললে হয়ত, তাঁকে নির্বাচন কমিশন নোটিস দিয়ে দিত। কোচবিহারের সভা থেকে নরেন্দ্র মোদি বলেন, “ভোটপ্রচারে সরাসরি মুসলিমদের একজোট হওয়ার কথা বলছেন দিদি। বলছেন, মুসলিম ভোট যেন ভাগ না হয়। আর এর উলটোটা যদি আমরা বলতাম। যদি বলতাম, হিন্দু ভোট যেন ভাগ না হয়, তাহলে কমিশনের আট দশটা নোটিশ এতক্ষণে চলে আসতো।“
মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদি এই মন্তব্য করেন। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠাল নির্বাচন কমিশন। এ নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কমিশনের উদ্দেশে কটাক্ষের সুরে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ট্যুইট করে বলেছেন বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন মমতাদিকে নোটিস ইস্যু করেছে। তৃণমূল যে অভিযোগগুলি করেছিল, তার কী হল? ১. বিজেপি প্রার্থীর টাকা বিলোনোর ভিডিও প্রমাণ, ২. বিজেপির মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য এবং ভোট দেওয়ার জন্য ক্যাশ কুপন বিলি। মহাশয়গণ - নিরপেক্ষতার ভানটা অত্যন্ত চালিয়ে যান।
নির্বাচন কমিশনের পাঠানো নোটিসে নির্বাচনী আচরণবিধির ৩টি ধারার উল্লেখ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩ নম্বর ধারায় বলা আছে, ভোট পাওয়ার জন্য কোনও জাতি অথবা ধর্মীয় ভিত্তির প্রতি আবেদন করা যাবে না। মসজিদ, মন্দির, চার্চ অথবা অন্য ধর্মীয় স্থলকে নির্বাচনী প্রচারের ফোরাম কিংবা প্রোপাগান্ডা হিসাবেও ব্যবহার করা যাবে না।