আশাবুল হোসেন, পূর্ব মেদিনীপুর:  ১ এপ্রিল রাজ্যের হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে ভোট। কালই শেষ হচ্ছে প্রচার। তার আগে আজ নন্দীগ্রামে রোড শো করবেন ও তিনটি জনসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের ক্ষুদিরাম মোড় থেকে ঠাকুরচক পর্যন্ত রোড শো দিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূলনেত্রীর এদিনের প্রচার। মূল রাস্তা ছেড়ে হুইলচেয়ারে চড়েই তিনি ঢুকে পড়েছেন গ্রামের রাস্তায়। ৮ কিলোমিটার রাস্তা হুইলচেয়ারে চড়েই চলবে প্রচার। ঠাকুরচকে পৌঁছে প্রথম জনসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় জনসভা রয়েছে বয়াল ও আমদাবাদে। 


১ এপ্রিল ভোট হবে নন্দীগ্রামে। তার ঠিক তিন দিন আগে, রবিবার নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই, নাম না করে বাবা শিশির অধিকারী ও ছেলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কার্যত বোমা ফাটান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, বাপ-ব্যাটার অনুমতিতেই ঢুকেছিল চটি পরা পুলিশ। 


পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেননি সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া কাঁথির সাংসদও। তাঁর জবাব, ওনার মেমারি শর্ট, ভোটে জিততে পাগলামি শুরু করেছে। আমরা বামের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। শুভেন্দু নেতৃত্ব দিয়েছিল।


 



 


২০০৭-এর ১৪ মার্চ। রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের নন্দীগ্রাম। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৪ জন। সেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়, চটি পরা পুলিশের কথা টেনে এতদিন সিপিএম ও বাম সরকারকে আক্রমণ করে এসেছেন। কখনও পাশে থাকতেন শিশির অধিকারী কিংবা শুভেন্দু। 


কিন্তু ইস্যু এক থাকলেও বদলে গেছে সময়। বদলে গেছে প্রতিপক্ষ। এতদিন যাঁদেরকে পাশে নিয়ে বাম সরকারকে বিঁধতেন, রবিবার সেই চটি পরা পুলিশের প্রসঙ্গ টেনে বাবা-ছেলেকে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


বিজেপি তাঁকে নন্দীগ্রামের প্রার্থী করার পর থেকে, বারবারই নিজেকে ভূমিপুত্র বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। এদিন তাঁর সেই দাবি নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন তুললেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী। বললেন, আমি বহিরাগত, তুমি ভূমিপুত্র, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় কোথায় ছিলে? সূর্যোদয়ের সময় কোথায় ছিলে? ১৫ দিন বাড়ি থেকে বেরোইনি। মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসা করুন, যদি সত্যি কথা বলে। জবাব দিয়েছেন শিশির। বলেন, ১ তারিখ নন্দীগ্রামের মানুষ সার্টিফিকেট দিয়ে দেবে। আন্দোলনে এসেছি কিনা, একেকদিন ১০-১৫ হাজার মানুষ ঘরছাড়া আছে, নন্দীগ্রামের মানুষ জানে, এটা ভবানীপুরের কারও থেকে জানতে চাই না।


ছেলে শুভেন্দু ও সৌমেন্দ অধিকারীর দেখানো পথে হেঁটেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শিশির অধিকারী। কিন্তু বাবা-ছেলের সম্পর্ক যে আদতে অম্ল-মধুর, এদিন তা বোঝাতে অতীতের উদাহরণ তুলে ধরেন তৃণমূলনেত্রী।  বলেন, শিশির অধিকারীকে যখন মন্ত্রী করি, তখন ছেলে বলেছিল বুড়োভামকে মন্ত্রী করেছি। শপথেও যায়নি।


পাল্টা শিশির বলেন, মন্ত্রী তো হলাম ৯ সালের পর, শুভেন্দু এমপি, আমার কথা ছিল-ওকে মন্ত্রী করো, ও ছেলেমানুষ, ওকে কাজ করতে দাও আমার দরকার নেই, এই বলে তো আর শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ভোট পাওয়া যাবে না।