সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: নির্বাচনী প্রচারে মতুয়া ঠাকুরবাড়িকে অপমান করছেন গাইঘাটার তৃণমূল প্রার্থী নরোত্তম বিশ্বাস। ভোটের মুখে এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। প্রশ্ন উঠেছে, মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র গাইঘাটাতে কি তৃণমূলের সংসারে অশান্তি লাগল এবার?


নয়া নাগরিকত্ব আইন কার্যকর এবং নির্বাচনে মতুয়া প্রার্থী ইস্যুতে বিজেপির সঙ্গে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মনোমালিন্য আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। মতুয়া সম্প্রদায়ের হেডকোয়ার্টার হিসেবে পরিচিত গাইঘাটাতে এবার তৃণমূলের ঘরেও অশান্তির সুর। গাইঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নরোত্তম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি ও প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘‘প্রচারে বেরিয়ে নরোত্তম বিশ্বাস ভক্তদের ঠাকুরবাড়ি যেতে বারণ করছেন। বলছেন, ঠাকুরবাড়িতে আর কিছু নেই। ওখানে গিয়ে কোনও লাভ নেই। এতে মানুষের সমর্থন হারাবে তৃণমূল ৷’’


মতুয়া সম্প্রদায়ের বড় মা, প্রয়াত বীণাপাণি দেবীর বড় পুত্রবধূ মমতাবালা ঠাকুর সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন ঠাকুরনগরের মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ তিনি। অথচ এখন তাঁরই নিশানায় গাইঘাটার তৃণমূল প্রার্থী। মমতাবালা ঠাকুরের কথায়, ‘‘হরিণঘাটার বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারের শিষ্য। ও নিজেকে বলে বেড়াচ্ছে ঠাকুর বাড়ির লোক। মতুয়া নয়। ঠাকুর বাড়ির লোকও নয় ৷’’


মমতাবালা ঠাকুরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গাইঘাটার তৃণমূল প্রার্থী নরোত্তম বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি কোনও দিন ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। মতুয়া হয় তার কর্মে আদর্শে ৷’’


বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল কোঅর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘উনি মতুয়া ধর্মের প্রচারক। মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধ থাকতে পারে৷’’


বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে যে সমস্যা আছে, মমতাবালার কথাতেই তা পরিষ্কার।’’


২২ এপ্রিল ষষ্ঠ দফায় গাইঘাটা বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহণ ৷ রাজ্যে মতুয়া ভোট বড় ফ্যাক্টর। নির্বাচনের মুখে গাইঘাটার প্রার্থীকে নিয়ে তৃণমূলের এই অশান্তি ভোটবাক্সে কোনও প্রভাব ফেলে কিনা, এখন সেটাই দেখার।