কলকাতা: নন্দীগ্রামে মনোনয়ন পেশের দিনই আহত হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল, বুধবার রাতেই তাঁকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএমে। বুধবার মধ্যরাতে একটি ট্যুইট করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির ট্যুইটার হ্য়ান্ডেলকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, "অপেক্ষা করুন, ২ মে রবিবার বাংলার মানুষ শক্তি দেখাবে। প্রস্তুত হও।" ওই ট্যুইটের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও পোস্ট করেন তিনি।



কী ঘটেছিল গতকাল? বুধবার নন্দীগ্রামে বিরুলিয়া বাজার এলাকায় মাটিতে পড়ে গিয়ে পায়ে, কোমরে, মাথায়, বুকে চোট। রীতিমতো পাঁজাকোলা করে মুখ্যমন্ত্রীকে গাড়িতে তোলা হয়রাতেই গ্রিন করিডর করে আনা হয় কলকাতায়। ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। মমতার অভিযোগ, চার-পাঁচজন ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা মেরেছে। পা ফুলে গেছে, জ্বর এসেছে। চক্রান্ত করে ধাক্কা মেরেছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর বাঁ পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতার হাড়ে চিড় ধরেছে। ওই পায়ের পেশিতেও চোট লেগেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ পা ফুলে রয়েছে। গতকাল রাতে এমআরআই-এর পর পায়ে টেম্পোরারি প্লাস্টার করা হয়েছে। শুরু হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক।


একাধিক পরীক্ষার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে ৪৮ থেকে৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিত্সকেরা। আজ আবার মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিত্সকরা তাঁকে পরীক্ষা করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর চিকিত্সার জন্য ৯ সদস্যের দল গঠিত হয়েছে। এসএসকেএমের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও তিন বিভাগীয় প্রধান ও আরও পাঁচ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডে। রাখা হয়েছে অর্থোপেডিক, নিউরো সার্জারি, নিউরো মেডিসিন, জেনারেল সার্জারি, কার্ডিওলজি, এন্ডোক্রিনোলজি, জেনারেল মেডিসিন এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞদের।


গতকালের এই ঘটনায় ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ শুরু করেছেন তৃণমূল। নন্দীগ্রামের হাজরাকাটায় বিক্ষোভ মিছিল তৃণমূলের। সকালে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তৃণমূল নেতা শেখ সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে রাজারামচক থেকে হাজরাকাটা পর্যন্ত মিছিল করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। সোনাচূড়া থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে গড়চক্রবেড়িয়াতে রাস্তায় বসে পড়ে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ।


দুর্গাপুরের মুচিপাড়া ও অন্ডালে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। আসানসোলের হটন রোডে টায়ার জ্বালিয়ে জিটি রোড অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা। সকালে বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। বর্ধমান-কালনা রোডে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা। দেগঙ্গার তৃণমূল বিধায়ক রহিমা মণ্ডলের নেতৃত্বে টাকি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অবরোধ শুরু হয় আমডাঙার দারিয়াপুরে। হাসনাবাদ-শিয়ালদা শাখার কড়েয়া-কদম্বগাছি স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।