কলকাতা: টিকিট না পাওয়ায় ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মশিবিরে গেলেন আরও এক বিধায়ক। বিজেপি যোগ দিলেন তেহট্টর তৃণমূল বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্ত। এদিন বিজেপি কার্যালয়ে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন গৌরীশঙ্কর দত্ত। বললেন, ‘২১ বছর কাজ করেও তৃণমূল সৌজন্য দেখায়নি। বিজেপিতে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করব।’


একদা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ গৌরীশঙ্কর দত্ত ১৯৯৮ সালে যোগ দেন তৃণমূলে। ২০১১-তে তেহট্ট থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হেরে যান। তারপরও ২০১২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত নদীয়ায় তৃণমূলের সভাপতিও ছিলেন তিনি।


গত লোকসভা ভোটে নদিয়ায় তৃণমূল ধাক্কা খাওয়ার পর, তাঁকে সরিয়ে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে জেলা সভানেত্রী করে দল।  এবার বিধানসভা ভোটেও তাঁকে টিকিট দেয় তৃণমূল। তার জায়গায় তেহট্টে তাপসকুমার সাহাকে প্রার্থী করা হয়েছে। 


প্রার্থী নির্বাচনের আগে তাঁর সঙ্গে আলোচনাও করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন তেহট্টের বিধায়কের ছেলেও। 


গৌরীশঙ্করের পাশাপাশি, এদিন পদ্ম-শিবিরে যোগ দিলেন তপনের তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা।  বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলের বোন
বিজেপিতে যোগ দিলেন টিএমসিপি সদস্য রাকেশ বিশ্বাস। 


এছাড়া, এদিনই গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন পানিহাটি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর ২ সদস্য, হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদ সদস্যের। 


উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সিঙ্গুরের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, বিধানসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার তথা সাতগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহ, বিদায়ী বিধায়ক জটু লাহিড়ী, ফুটবলার তথা বিদায়ী বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস, সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক শীতল সর্দার, অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী। হেস্টিংসে বিজেপি কার্যালয়ে দিলীপ ঘোষের হাত থেকে পতাকা নিলেন তাঁরা।


বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সাতগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহ। যিনি নির্বাচনে টিকিট না পাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। বরাবর মমতার একনিষ্ঠ কর্মী তথা ছায়াসঙ্গী হিসাবে পরিচিত সোনালি। যদিও বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। ক্ষুব্ধ সোনালি বলেছিলেন, দিদি যা ভাল বুঝেছেন করেছেন। তারপরই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান তিনি।


সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও টিকিট না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন। টানা দশ বছর সিঙ্গুরের বিধায়ক ছিলেন তিনি। বেচারাম মন্ডলের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের পরিবর্তে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বেচারামকে সিঙ্গুরে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তারপরই রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই। যদিও সেই অবস্থান বদলে সোমবার তিনি নাম লেখালেন মোদি-অমিত শাহর দলে।


একইসঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস, শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ি।