সুজিত মণ্ডল,নদিয়া: গত ৩০শে জানুয়ারি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়াদের সঙ্গে দিল্লিতে অমিত শাহের বাড়িতে যান রানাঘাটের পদত্যাগী পুর-প্রশাসক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। অন্যান্যদের সঙ্গে তিনিও যোগ দেন বিজেপিতে। এই পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ই কি আগামী বিধানসভা ভোটে রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী! তাঁর নামে নদিয়ার তাহেরপুর, রানাঘাট পুরসভার একাধিক জায়গায় টাঙানো হয়েছে এমনই একাধিক ফ্লেক্স-পোস্টার! তাতে লেখা, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের মনোনীত প্রার্থী জননেতা পার্থসারথি চ্যাটার্জীকে এই চিহ্নে ভোট দিন।
এখনও ভোটের দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি কোনও রাজনৈতিক দল। কিন্তু, কে বা কারা এই ফ্লেক্স টাঙাল তা নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, গোটা ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূলের চক্রান্ত। তিনি বিজেপিতে যোগদান করে আপ্লুত। কাজেই এটা যারা করেছে তারা চক্রান্ত করেই করছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপির সঙ্গে তাঁর একটা বিভেদ বানানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এতে তারা সাফল্য পাবে না। এই চক্রান্ত পুরোপুরি তৃণমূল কংগ্রেসের।
একই অভিযোগ তুলেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্বও। নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলেন, বলেন, প্রার্থী কে হবে তা ঠিক করবে দলের উচ্চ নেতৃত্ব। সাধারণ কর্মকর্তারা ঠিক করতে পারেনন না। আর এইরকম ফ্লেক্স বিজেপি দেয়নি। তৃণমূলী স্বার্থান্বেষী মানুষের এর পিছনে হাত রয়েছে। বিজেপির কার্যকর্তারা এমন কাজ করতে পারেন না। বিজেপিকে দ্বিখণ্ডিত করা, কার্যকর্তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি করানোর একটি অপচেষ্টা মাত্র। যদিও তাতে তারা সফল হবে না।
যদিও এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছে তৃণমূল। নদিয়া জেলা সাধারণ সম্পাদক সাধন সরকার দাবি করেছেন, তাহেরপুরে বিজেপির অস্তিত্বই বিপন্ন। পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় যেদিন তৃণমূল ছেড়ে চলে গিয়েছেন, সেদিন থেকে তাঁর সঙ্গে কোনও রকম সম্পর্ক নেই। এখানে বিজেপি তাদের জল মাপতে চাইছে। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সংযোগ নেই।
কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসার পর, ২০১০ ও ২০১৫ সালে তৃণমূলের টিকিটে জিতে রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান হন পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। ২০১১ সালে রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক হন তিনি। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে অবশ্য হেরে যান। সম্প্রতি তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। গত ২৫ জানুয়ারি, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়। তার দুদিনের মাথায়, রানাঘাটের পুর প্রশাসকের পদ ছাড়েন পার্থসারথি। এরপর বিজেপিতে যোগদান।