কলকাতা: শিয়রে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Elections 2023)। তার আগে তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। পঞ্চায়েত দিবস পালন ঘিরে মুখোমুখি সংঘাতে রাজ্য এবং রাজ্যপাল। তৃণমূল বনাম বিজেপি বাগযুদ্ধ চলছে গতকাল থেকে। সেই নিয়ে এবার বিজেপি-কে (BJP) আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। একই দিনে যেখানে বঙ্গভঙ্গ এবং পঞ্জাবের বিভাজন হয়েছিল, সেখানে শুধু বাংলায় উদযাপন কেন, প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন ঘিরে তরজা চরমে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আপত্তি সত্ত্বেও মঙ্গলবার রাজভবনে , রাজ্যপাল সিভি আনন্দ (CV Ananda Bose) বোসের উদ্যোগে পালিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ দিবস। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভা থেকে আবার মিছিলও বার করেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই উদযাপন নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সেই আবহেই মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল। বিজেপি-র উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, "আমি প্রশ্ন করতে চাই বিজেপি-কে। যে তত্ত্ব সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করছেন আপনার, সেই তত্ত্বে পঞ্জাবে পঞ্জাব দিবস পালন করছেন না কেন? একই দিনে, একই পরিকল্পনায় দেশভাগ, রাজ্যভাগ হয়েছিল। তাহলে ওখানে পঞ্জাব দিবস পালন করছেন না কেন আপনারা। কেন ওখানকার রাজ্যপাল করছেন না? এমন দ্বিচারিতা করছেন কেন?"
পশ্চিমবঙ্গ দিবস বলে যে দিনটিকে ঘিরে এত বিতর্ক, ১৯৪৭ সালের সেই ২০ জুন তৎকালীন অখণ্ড বাংলা বিভাজনের বিষয়টি রাজ্য বিধানসভায় উত্থাপিত হলে, বঙ্গভঙ্গের পক্ষে বেশি ভোট পড়ে। ফলে দু'টুকরো হয়ে যায় বাংলা। তৈরি হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) এবং একটি অংশ ভারতে রয়ে যায় পশ্চিমবঙ্গ নামে।
পশ্চিমবঙ্গ দিবসের সঙ্গে জড়িয়ে বঙ্গভঙ্গের যন্ত্রণা
এর পর ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা অর্জন করে ভারত। কিন্তু সেই স্বাধীনতা অর্জিত হয় পঞ্জাব এবং বাংলা বিভাজনের মাধ্যমে। আজও সেই যন্ত্রণাময় ইতিহাস কুরে কুরে খায় শিকড় বিচ্ছিন্ন মানুষদের। ইংরেজ চলে গেলেও, তাদের টেনে যাওয়া বিভাজনের ক্ষত রয়ে গিয়েছে দগদগে হয়ে। তাই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠছে।
রাজ্যপালকে লেখা চিঠিতে সেই কথা উল্লেখ করেছেন মমতাও। তিনি লেখেন, 'স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত কখনও রাজ্যএর প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয়নি। সাম্প্রদায়িক শক্তি কাজ করেছিল দেশভাগের নেপথ্যে। সেই সময় তা প্রতিহত করা যায়নি। আপনার এই উদ্যোগ বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষের আবেগকে শুধু আহত করবে না, এই সিদ্ধান্তে আসলে অপমান করা হয় তাঁদের। এই অসাংবিধানিক এবং একতরফা- সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি আমরা'।