কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য (Panchayat Elections 2023)। কেন্দ্রীয় বহিনী মোতায়েন নিয়ে রাজ্য সরকারের SLP খারিজ করল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর যে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট, সেই রায়ই বহাল রাখা হল। রাজ্য সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সেখানে। প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনও।


মঙ্গলবার শুনানি চলাকালীন এদিন আদালত প্রশ্ন তোলে, যেখানে পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী নেই রাজ্য সরকারের হাতে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাতে কলকাতা হাইকোর্ট যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিখরচায় বাহিনী পাঠাতে বলেছে, সেখানে আদালতের নির্দেশ মানতে অসুবিধে কোথায়? 


এ দিন শীর্ষ আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্যে নির্বাচন কমিশনও। আদালতে কমিশনা জানায়, প্রাথমিক মূল্যায়নে ৬১,৬৩৬ বুথের মধ্যে ১৮৯টি স্পর্শকাতর। এই বুথের জন্য কিছু অতিরিক্ত বাহিনীর প্রয়োজন রয়েছে। রাজ্যের কাছে সেই সাহায্য চাওয়া হবে। তাতে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় তাদের। 


কমিশনের উদ্দেশে এদিন আদালত প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, "কমিশন কীভাবে হাইকোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করতে পারে? আপনারা রাজ্যের কাছে বাহিনী চেয়েছেন, সেই বাহিনী কোথা থেকে এল তাতে আপনাদের কী? বাহিনী রাজ্য থেকে এল, নাকি পাশের রাজ্য থেকে এল, নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী এল, তাতে আপনারা কী করে প্রভাবিত হচ্ছেন? স্বশাসিত সংস্থা হয়ে আপনারা এসএলপি দায়ের করলেন কেন? আপনাদের এসএলপি-র গ্রহণযোগ্যতা কী?"


আরও পড়ুন: Panchayat Poll 2023 : নির্বাচন করানো মানে হিংসার লাইসেন্স দেওয়া নয়, পঞ্চায়েতে বাহিনী-মামলায় মন্তব্য শীর্ষ আদালতের


রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নিয়ে বলতে গিয়ে, সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর দায়িত্ব কমিশনের। তারা কী করে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন, জানতে চাওয়া হয়। শেষ মেশ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর হাইকোর্টের সেই নির্দেশকেই বহাল রাখে দেশের শীর্ষ আদালত।


পঞ্চায়েত ভোটে সর্বত্র মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের সেই নির্দেশে এদিন হস্তক্ষেপ করতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। তাই রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। ১৩ জুন প্রথম নির্দেশ দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৫ জুন ফের কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে বলে আদালতে জানায় রাজ্য। তাতে আদালত জানতে চায়, "এই ৪৮ ধণ্টায় পরিস্থিতির কী পরিবর্তন হয়েছে?" 


রাজ্য় সরকার এদিন জানায়, পাঁচ রাজ্য থেকে তাদের তরফে পুলিশ চাওয়া হয়েছে। এর উত্তরে আদালত বলে, "তার মানে আপনাদের কাছে পর্যাপ্ত পুলিশ নেই!  তাই আপনারা প্রায় আধ ডজন রাজ্যের কাছে সাহায্য চেয়েছেন?" নির্বাচন করানো মানে হিংসার লাইসেন্স দেওয়া নয় বলেও এদিন মন্তব্য করেন আদালত। বলা হয়, হিংসা কখনও নির্বাচনের সহযোগী হতে পারে না।