নয়াদিল্লি: মেরেকেটে আর এক বছর বাকি পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Elections 2024)। তার আগে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে মুঠোয় ধরে রাখতে সফল হল বিজেপি। ত্রিপুরায় ফের ক্ষমতায় ফিরছে তারা। নাগাল্যান্ডেও জোট সরকারের শাসনই কায়েম থাকছে। মেঘালয়ে এ বার ‘একলা চলো’ নীতি নিয়ে নামলেও, শেষ মেশ কনরাড সাংমার ন্যাশনাল পিপলস পার্টিকে সরকার গড়তে সমর্থন জুগিয়েছে। অর্থাৎ তিন রাজ্যেই লাভের ঘরে রয়েছে বিজেপি (BJP)। (Nagaland And Meghalaya Elections)
নাগাল্যান্ডে জোট সরকারের শাসনই কায়েম থাকছে
নাগাল্যান্ডে ন্য়াশনালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি ২৫টি আসনে জয়ী হয়েছে। বিজেপি-র ঝুলিতে গিয়েছে ১২টি আসন। বিজেপি এবং এনডিপিপি কেন্দ্রে জোটে রয়েছে। তাই তাদের সরকারে আসা রোখা যাবে না কোনও ভাবেই। তবে চমকপ্রদ ভাবে সেখানে শরদ পওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির সাত প্রার্থীই বিজয়ী হয়েছেন। ফলে নাগাল্যান্ড বিধানসভায় বিরোধী দল হতে চলেছে এনসিপি। বিরোধী দলনেতাও তাঁদের দল থেকেই কাউকে নির্বাচন করা হবে।
মেঘালয় বিধানসভার ৬০ আসনের মধ্যে এনপিপি-র দখলে গিয়েছে ২৬টি। ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। কংগ্রেস এবং তৃণমূল পাঁচটি করে আসন জিতেছে। একার ক্ষমতায় দু’টি আসন জিতেছে বিজেপি। সেখানে ফলাফল ত্রিশঙ্কু হওয়ার দিকেই এগোচ্ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দিল্লিতে অমিত শাহকে ফোন করে বসেন কনরাড। তার একদিন আগে অসমনের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে গুয়াহাটিতে বৈঠকও হয় তাঁর। তাতেই পুরনো সম্পর্ক ফের জোড়া লেগে যায়।
বিজেপি-র সমর্থনে এই মুহূর্তে সেখানে এখন সাংমার সরকার গড়ে ওঠার পক্ষে ২৮টি আসন রয়েছে। ম্যাজিক সংখ্যা ৩১-এর চেয়ে তিনটি কম। এনপিপি সূত্রে খবর, নির্দল এবং স্থানীয় দলগুলির সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় আসন পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এ নিয়ে আগেই যদিও কটাক্ষ করেন মেঘালয়ে প্রথম বার খাতা খোলা তৃণমূল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষমিশ্রিত সুরেই জানিয়েছেন যে, বিধায়ক কেনাবেচায় অভ্যস্ত বিজেপি। মেঘালয়ে তাদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
উত্তর-পূর্বে বিজেপি-র এই জয়ের নেপথ্যে অসমের মুখ্য়মন্ত্রী হিমন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যেই বিজেপি-র নির্বাচনী কৌশল থেকে প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এমনকি মেঘালয়ে শেষ মুহূর্তে কনরাড সাংমার সরকার গঠনেও মধ্যস্থতা করেছেন তিনি। বিজেপি সূত্রে খবর, নির্বাচন শেষও হয়নি, তখন থেকেই কাজে নেমে পড়েছিলেন হিমন্ত। তিপরা মোর্চার প্রদ্য়োৎ মানিক্য দেববর্মা থেকে সাংমার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন তিনি। তাতে বিজেপি-র অন্দরেও হিমন্ত ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন।
নেপথ্যে অসমের মুখ্য়মন্ত্রী হিমন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
তবে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তর-পূর্বে বিজেপি-র এই সাফল্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ অসম ইতিমধ্যেই তাদের দখলে চলে গিয়েছে। ২০১৬ সালেই সেখান থেকে কংগ্রেসকে হটিয়ে দিয়ে রাজত্ব করে চলেছে বিজেপি। অরুণাচলপ্রদেশে ২০১৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে তারা। কংগ্রেস ভাঙিয়ে ২০১৭ সালে মণিপুরেও সরকার গঠন করে বিজেপি। ২০২২-এ সেই ক্ষমতা ধরে রাখে তারা। এর মধ্যে অসম, ত্রিপুরা হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য। অন্য রাজ্যগুলিতে জনজাতি আধিক্যও রয়েছে। যে কারণে বিগত কয়েক মাস ধরে জনজাতি সম্প্রদায়ের মনজয়ের চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে বিজেপি-কে। ২০২৪-এর আগে তার সুফল তুলতে মরিয়া তারা।