ঝিলম করঞ্জাই ও সোমনাথ মিত্র, কলকাতা: আরও এক শিশুর মৃত্যু কলকাতা মেডিক্যালে (Calcutta Medical College)। গতকাল রাত আড়াইটা নাগাদ মৃত্যু হয় হুগলির বাসিন্দা এক বছর ৩ মাসের শিশুকন্যার। গত ২১ ফেব্রুয়ারি জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সূত্রের খবর, অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছিল তার শরীরে। রাতে অ্যাকিউট মাল্টি অরগ্যান ফেলিওরের জেরে মৃত্যু। ডেথ সার্টিফিকেটে অ্যাডিনো ভাইরাল ইনফেকশনের উল্লেখ।


আরও এক শিশুর মৃত্যু: শিশুর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বর ছিল শিশুর। দিন পাঁচেক পর সর্দির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে ইমারজেন্সিতে শিশুকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি হয়নি। পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ভর্তি করা হয় আইসিইউ-তে। বুধবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় একরত্তির।


সন্তান হারা হল আরও মায়ের কোল, হাসপাতালে শুধুই হাহাকার। অ্যাডিনো-আতঙ্কের মধ্যে বি সি রায় হাসপাতালে আরও ৩ শিশুর মৃত্য়ু হল। উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল কলেজে মৃত্য়ু হল ১ শিশুর। এই নিয়ে গত ২ মাসে মৃত শিশুর সংখ্য়া বে়ড়ে দাঁড়াল ৫০।বুধ-বৃহস্পতি ২ দিনে, বি সি রায় হাসপাতালে মৃত্য়ু হয়েছে ৭ জনের। বৃহস্পতিবার সকালে, বি সি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় ভাঙড়ের বাসিন্দা, ৩ মাসের এক শিশুকন্যার। জ্বর-শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ICU-তে চিকিৎসা চলছিল তার। এরমধ্যেই সব শেষ। এদিন, ভোরেই বি সি রায় শিশু হাসপাতালে মৃত্য়ু হয় হুগলির খানাকুলের বাসিন্দা, সাড়ে ৩ বছরের শিশুকন্য়ার। মঙ্গলবার থেকে PICU-তে ভর্তি ছিল সে। মৃত্য়ুর কারণ নিউমোনিয়া বলে উল্লেখ রয়েছে ডেথ সার্টিফিকেটে।

অন্য়দিকে, বুধবার রাত ১ টা নাগাদ বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্য়ু হয়,বারাসাতের বাসিন্দা আড়াই মাসের শিশুকন্য়ার। জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে দশ দিন ধরে, বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল ওই শিশু। শনিবার বি সি রায় হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। বুধবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃ্ত্যু হয় উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার বাসিন্দা, ১৯ দিনের শিশুর। জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গ থাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শিশুকে। হাসপাতালে হাসপাতালে মৃত শিশুর পরিজনের হাহাকার।সন্তান হারানোর যন্ত্রণার মর্মান্তিক ছবি।

স্বাস্থ্য় দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারি মাসে, রাজ্য়ের সরকারি হাসপাতালে অ্য়াডিনো আক্রান্ত হয়ে মৃত্য়ু হয়েছে ১২ শিশুর। তারমধ্যে বেশ কয়েক জনের কোমর্বিডিটি ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি ১২টা কেসের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি, ২ টো অ্যাডিনো ভাইরাস। আর ১০টা কেস হচ্ছে, ধরুন কারও হয়ত সেপসিস হয়েছে, কারও হয়ত রিপিটেড অ্যাটাক হয়েছে, যাকে আমরা অ্যাডিনো ভাইরাস বলছি। একটি কেস হয়েছে বসিরহাট, কলকাতার চিত্তরঞ্জনে। বাদবাকিগুলি নানারকম উপসর্গ আছে, কোনওটা ওয়েট কম, বেশিরভাগ এগুলিই। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’’ এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন। নম্বর হল 1800 313 444 222।


আরও পড়ুন: Md Salim: 'দুর্নীতি আর দুষ্কৃতীতন্ত্র থেকে মুক্তি চাইছে মানুষ' প্রতিক্রিয়া সেলিমের