রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: শ্রমিক আন্দোলনের ধাক্কায় চা বাগান বন্ধের জের। নাগরাকাটার ব্লক সভাপতিকে অপসারণ ঘিরে প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তৃণমূল জেলা সভাপতির বাগানে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন অপসারিত নেতা। পাল্টা সুর চড়িয়েছেন জেলা সভাপতি।


ভোটের মুখে জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় অস্বস্তি আরও বাড়ল তৃণমূলের। নাগরাকাটার ব্লক সভাপতির অপসারণ ঘিরে চা-বলয়ের এই আসনে প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। জলপাইগুড়ির এই ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মনোজ মুণ্ডার আন্দোলনের জেরে চ্যাংমারি চা বাগান বন্ধ হওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার জেরে ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দিতেই জেলা সভাপতিকে তীব্র আক্রমণ করলেন অপসারিত তৃণমূল নেতা। 


নাগরাকাটার তৃণমূল কংগ্রেসের অপসারিত ব্লক সভাপতি মনোজ মুণ্ডা বলেছেন, ‘উনিও ছটি চা-বাগানের মালিক। আমার এগ্রিমেন্ট কার্যকর হলে তো ওঁর বাগানগুলোতেও সেই এগ্রিমেন্ট কার্যকর হবে। আমি শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে বড় আন্দোলনে সামিল হব এবং কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর বাগানেও যাব।’


জেলা সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে দলনেত্রীকে মেসেজ করেছেন নাগরাকাটার এই তৃণমূল নেতা। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকার চা শ্রমিকরা।


এক চা শ্রমিক জানিয়েছেন, ‘চ্যাংমারি বাগানে সব ব্যাপারে শ্রমিক ছাঁটাই। বাগান স্টাফ থেকে শ্রমিক, অনেককিছু থেকে আমাদের বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক দেশে মজদুর অধিকার নিয়ে লড়াই করছি, আন্দোলন করছি।’


যদিও তৃণমূল জেলা সভাপতির পাল্টা অভিযোগ, দলের ক্ষতি করেছেন মনোজ মুণ্ডা। জলপাইগুড়ির তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর দাবি, ‘সুকরা মুন্ডার নির্দেশে ওঁকে বসানো হয়েছিল। দু’মাস ধরে ভোটার লিস্ট জেলা অফিসে পড়ে থাকা সত্ত্বেও তিনি নিয়ে যাননি। ওঁর বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ আসছিল। ওপর মহলে অভিযোগও হয়েছিল। তারপর ওপর থেকে নির্দেশ আসার পরেই তাঁকে সরানো হয়েছে।’


ব্লক সভাপতির অপসারণ ঘিরে কোন্দল সামনে চলে আসায় তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি। জলপাইগুড়ির বিজেপি জেলা সহ সভাপতি অলোক চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘যতই ব্লক লেভেলে পরিবর্তন করুন, কোনও লাভ নেই। আগে মানসিকতাটা পরিবর্তন করুন, তাহলে তৃণমূল কিছুটা বেঁচে থাকে। এসব করে লাভ হবে না।’


চা বাগান ও আদিবাসী প্রভাবিত নাগরকাটায় ১৭ এপ্রিল ভোট। মাস চারেক আগে নাগরাকাটার তৃণমূল বিধায়ক যোগ দেন বিজেপিতে। নির্বাচনের মুখে চা বাগানে আন্দোলন নিয়ে জেলা সভাপতির সঙ্গে নাগরাকাটার তৃণমূল নেতার কোন্দল ভোটে প্রভাব পড়ে কি না তা নিয়ে বাড়ছে জল্পনা।