কলকাতা: প্রত্যেক বারের মতো এবারেও পুজো আসছে। তবে এবারের পুজো যেন একটু আলাদা। কারণটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই বোধহয় কারও ক্ষেত্রেই। আরজি কর কাণ্ডকে কেন্দ্র করে এখনও উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে কলকাতা। রাস্তায় রাস্তায় মিছিল.. পুজোর নতুন জামার থেকে মানুষ এখন অনেক বেশি করে চাইছেন ন্যায়বিচার। আর এই আবহেই মুক্তি পাচ্ছে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboprosad Mukherjee) ও নন্দিতা রায়ের (Nandita Roy) ছবি 'বহুরূপী' (Bohurupi)। আর সেই ছবিতে একজন পুলিশের ভূমিকায় দেখা যাবে আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee)-কে। 


বারে বারেই প্রযোজনা সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই ছবি শিবপ্রসাদ-নন্দিতার কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ছবি। আবিরের গলাতেও শোনা গেল সেই একই সুর। অভিনেতা বলছেন, 'এই ছবিটার শ্যুটিং প্রথমে হওয়ার কথা ছিল শীতকালে। তবে বিভিন্ন কারণবশত সেটা হতে পারেনি। প্রায় ৭০টা জায়গায় শ্যুটিং, একাধিক চেজিংয়ের দৃশ্য সব মিলিয়ে বেশ বড় একটা ব্যাপার। তবে যদি বলতে হয়, খুব খাটাখাটনি করে কাজ করেছি, তাহলে বলব, এটাই তো আমাদের কাজ। শারীরিক-মানসিকভাবে ভীষণভাবে সবটা ঢেলে দেওয়াই তো আমাদের কাজ। 'বহুরূপী'-র ক্ষেত্রেও সেই চেষ্টা করেছি। তবে ছোটবেলার সিনেমায় এমন সব পুলিশ দেখতাম যাঁরা অপরাধীদের ধাওয়া করছে, গুলি ছুঁড়ছে। তখন মনে হত, যদি এমন একজন পুলিশের ভূমিকায় অভিনয় করতে পারতাম! 'বহুরূপী' কিছুটা হলেও আমার সেই স্বপ্নপূরণ করেছে।'


এই ছবিতে আবিরের মূল লড়াই যাঁর সঙ্গে, তিনি শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। এই প্রথম অভিনেতা হিসেবে একসঙ্গে কাজ করছেন শিবপ্রসাদ-আবির। সেই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? একটু হেসে আবিরের উত্তর, 'টিজারে তো কিছুই দেখেননি। সবটাই দেখতে পাবেন ছবিতে। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এই ছবিটার জন্য যেভাবে নিজেকে বদলে ফেলেছেন, সেটা ভীষণ প্রশংনীয়। সঙ্গে সঙ্গে উনি দুর্দান্ত অভিনেতা। ওঁর বিপরীতে কেমন কাজ করেছি, সেটা পরিচালক শিবুদা আমায় বলেছেন। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে কতটা টক্কর দিতে পেরেছি সেটা দর্শক বলবেন।'


আরজি কর পরিস্থিতির মধ্যে মুক্তি পাচ্ছে 'বহুরূপী'। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ছবির প্রচারের জন্য আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীকেই। এই বিষয়ে আবির বলছেন, 'আমরা প্রত্যেকেই একটা অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তাই বলে তো আমরা কেউ কাজ থামাইনি। সিনেমা করছি বলে অনেকে মনে করছেন আমরা বিনোদন করছি, বিনোদনে রয়েছি। কিন্তু এই বিনোদনটাই তো আমাদের কাজ। এই সূক্ষ পার্থক্যটা বুঝতে পারার মতো মানসিকতাই এখন মানুষের মধ্যে প্রায় নেই। তাতে আমি কারও দোষ দিই না। আসলে মানুষ এতটাই অস্থির হয়ে রয়েছেন, এই দুটোকে গুলিয়ে ফেলাটাই তো স্বাভাবিক। ছবি মুক্তি পাচ্ছে, তবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে দর্শকদের তো ছবি দেখার জন্য জোর করতে পারি না। কেবল বলতে পারি, আমাদের ছবিও কিন্তু শুভ আর অশুভর লড়াইকেই তুলে ধরেছে। আর মানুষ যখন অস্থির থাকে, তখন তো শিল্পেরই প্রয়োজন।


Shreya and Anupam: ৬ মাসের চেষ্টায় অবশেষে শ্রেয়ার সঙ্গে কাজ করলেন অনুপম, তৈরি হল নতুন কোন গান?


বর্তমানে টলিউডের মধ্যেই হেনস্থার একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে। আবিরের কখনও মনে হয়েছে টলিউড নারীদের জন্য সুরক্ষিত নয়? আবির বলছেন, 'খুঁত সমস্ত ইন্ডাস্ট্রিতেই থাকে। তবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি অনেক বেশি লাইম লাইটে থাকে বলে খুঁতগুলো সামনে চলে আসে। তবে আরজি করের ঘটনা ঘটেছে বলেই যে ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে এত মানুষ সরব হয়েছেন এমনটা নয়। আমাদের প্রত্যেকের উচিত অন্যের দিকে আঙ্গুল না তুলে, নিজে আয়নার সামনে দাঁড়ানো। যে মহিলারা হেনস্থার স্বীকার হয়েছেন, যতবার তাঁদের অভিযোগ করতে হবে, ততবার সেই দুর্বিসহ স্মৃতি তাঁগের আবার করে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেটা হতে দেওয়া উচিত নয়। আমাদের প্রত্যেকের উচিত আগে নিজেরে শোধরানো, তারপরে সমষ্টিগত পরিবর্তনের কথা ভাবা যাবে। আমাদের প্রত্যেককে দায়িত্ব নিতে হবে ইন্ডাস্ট্রিটাকে আরও একটু ভাল করে তোলার জন্য। শুধু নারী হেনস্থার ক্ষেত্রেই নয়, অনেক সময়ে ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে জুনিয়রদেরও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সেই সমস্ত পরিস্থিতি যেন না আসে, বড় হিসেবে সেই খেয়ালও রাখতে হবে আমাদেরই। প্রফেশনালিজম মানে খারাপ ব্যবহার নয়, যা ইচ্ছে তাই করা হয়.. প্রফেশনালিজম বলে, প্রত্যেককে কাজের সমান পরিবেশ দেওয়া। 


আরও পড়ুন: New Bengali Serial: নতুন মোড়কে ফিরছে অন্বেষা-ঋত্বিকের পুরনো জুটি, কবে কোথায় দেখবেন এই ধারাবাহিক?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।