কলকাতা: ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন বিভিন্ন দলের তরফে ক্রমাগত আয়োজন হচ্ছে সভা সমিতির, তখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই সাংসদ বলেছিলেন, 'মাস্ক না পরলে আমার সভায় আসতে হবে না'। রাজনৈতিক দোষারোপকে সরিয়ে রেখে তাঁর গলায় বার বার শোনা গিয়েছিল করোনার বিরুদ্ধে সতর্কতার বার্তা ও দলের কাজকর্মের কথা। রাজনীতিবিদ হয়েও যেন বরাবরই স্রোতের বিপরীতে হাঁটেন টলিউডের প্রথম সারির এই অভিনেতা। দীপক অধিকারী ওরফে দেব।
পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে দেব প্রযোজিত নতুন ছবি 'হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী'। অভিনয়, প্রযোজনা আবার রাজনীতি সবকিছুই সাবলীলভাবে সামলাচ্ছেন তিনি। তবু রাজনীতির মঞ্চে তাঁর মতাদর্শ, বিশ্বাস সবার থেকে আলাদা। দেব বলছেন, 'আমি সবসময় মঞ্চে উঠে বলি, আমায় ভোট দিতে হবে না। যদি মনে করেন, আমাদের দল ঠিক কাজ করছে, তবেই ভোটটা দিন। দল যাতে জেতে, সেইজন্য মানুষের ভোট চাইছি। এর থেকে বড় আর তো কোনও লক্ষ্য নেই। কিন্তু আমি বুঝি না, তার জন্য কেন কোনও খারাপ শব্দ ব্যবহার করতে হবে! মানুষকে ভালোবেসে কিছু বোঝালে অবশ্যই বুঝবেন। আমায় হয়তো অনেকে বলবেন, 'এভাবে কেন কথা বলছিস!' কিন্তু দিনের শেষে, আমার লক্ষ্য জয়ী হওয়া। আমি এভাবেই জয়ী হতে চাই। আর যদি এভাবে না জিততে পারি, তাহলে হেরে গিয়ে ভালো আছি। আমি জীবনে এমন কোনও শব্দ ব্যবহার করব না, যাতে পরবর্তীকালে আমার ছেলেমেয়েরা লজ্জায় পড়ে।'
করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় ২ বছর ধরে কার্যত গৃহবন্দি মানুষ। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ কেবলমাত্র ইন্টারনেট বা টেলিভিশন। দেব বলছেন, 'করোনা পরিস্থিতিতে সব বাচ্চারাই বাড়িতে বন্দি। কোনও রাজনৈতিক বক্তৃতা এখন শিশুদের সামনে শোনা যায় না। সেখানে যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়, সেটা শুনে বাচ্চারা কী শিখবে! প্রথমেই অন্য কাউকে চোর বলা হচ্ছে! আমার মনে হয় অন্যকে দোষারোপ না করে আমি কী করতে চাই সেটা আগে বলা উচিত। বাকিটা জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়া হোক। বাচ্চাদের শেখানো হয়, সবসময় খারাপ কথা বলতে নেই। তারা জানুক, রাজনীতিবিদ মানেই খারাপ কথা বলে না। অনেক নেতা আছেন, যাঁরা ভালো কথা বলেন, তারপরেও নির্বাচনে যেতেন। অন্য দলের লোকেরাও এসে আমায় বলেছেন, 'তোমার রাজনীতির ধারা ভালো লাগে'। তবে আমি কখনও প্রশংসা পাওয়ার জন্য রাজনীতি করিনি। যে কোনও রাজনৈতিক দলই যখন বক্তৃতার মধ্যে খারাপ শব্দ ব্যবহার করলে, আমার রাগ হয়। মনে হয়, এত নেতিবাচক চিন্তা কেন!'