কলকাতা: প্রথম ছবি 'অল্প হলেও সত্যি' (Olpo Holeo Shotti)। ইতিমধ্যেই 'ব্যাঙ্গালোর ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল' ও 'জয় ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড' থেকে পুরস্কারও ভরেছে ঝুলিতে। এরই মধ্যে তিনি তৈরি দ্বিতীয় ছবি নিয়ে। পরিচালক সৌম্যজিৎ আদক (Soumyajit Adak)। দ্বিতীয় ছবি 'হৃদয়পুর' (Hridaypur)। দুই ছবিতেই মুখ্য চরিত্রে সৌরভ দাস ও দর্শনা বণিক। কেন? এরপর আর কী কী কাজ আসতে চলেছে? করোনাকালে হলে সিনেমা রিলিজ করানো কতটা চ্যালেঞ্জিং? সবকিছু নিয়েই এবিপি লাইভের (ABP Live) সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় পরিচালক সৌম্যজিৎ আদক।
প্রশ্ন: 'অল্প হলেও সত্যি'র সাফল্যে অনেক শুভেচ্ছা। দর্শক, সমালোচকদের থেকে এত প্রশংসিত হবেন, ভালবাসা পাবেন, আশা করেছিলেন?
সৌম্যজিৎ আদক: এতটা আশা করিনি। প্রথম ছবি তৈরি হয়ে মুক্তি পাওয়াটাই একটা স্বপ্ন পূরণের মতো। তারপর পুরস্কার তো বাড়তি পাওনা। কোনওরকম আশা ছাড়াই ছবিটা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু হ্যাঁ, আমরা সকলেই খুব চেষ্টা করে ছবিটা তৈরি করেছিলাম। সাধারণ মানুষের যাতে দেখে ভাল লাগে, সেই জায়গাটা তৈরি করতে চেয়েছিলাম।
প্রশ্ন: জীবনের প্রথম ছবি। কয়েকটা বড় ব্যানারের ছবির সঙ্গে করোনার মধ্যে আপনার ছবি মুক্তি পায়। রিস্ক মনে হয়নি?
সৌম্যজিৎ: হ্যাঁ, তখন ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে সিনেমা হল খুলছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে রিলিজ করব। যদিও খুব বড় নাম বাদ দিয়ে সিনেমা তখন রিলিজ হচ্ছিল না, বা কেউই সাহস পাচ্ছিল না।
এমনকী আমাদের প্রযোজনা সংস্থাও চেয়েছিল যে ছবিটা যতজনই দেখতে পান না কেন, তাঁদের জন্যই প্রেক্ষাগৃহে রিলিজ করানো হবে। আমাদের টিমটা তো খুব নতুন, ছবিটা ফেলে রাখতে চাইনি। রিস্ক তো ছিলই। কিন্তু সেই সময়ে ব্যবসা করার থেকেও কাজটা মানুষের কাছে পৌঁছনো বেশি প্রয়োজনীয় মনে হয়েছিল। আর মানুষ সিনেমা দেখতে চান। সেই সময়ে পরিস্থিতি আলাদা থাকলেও যে কয়েকজনই আসুন না কেন, তাঁদের তো মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
এখন তো ফের ১০০ শতাংশ দর্শক নিয়ে হল খুলে গেছে। হাউজফুল হচ্ছে ছবি। সেই সময়েও কাউকে এগিয়ে আসতে হত। নতুনরাও যদি রিস্ক না নেয়, ভয় পিছিয়ে যায়, তাহলে তো অসুবিধে।
প্রশ্ন: পরপর দুটো ছবি। দুই ছবিতেই সৌরভ-দর্শনা জুটি। একই কাস্টিং কেন?
সৌম্যজিৎ: (হেসে) এটা কিন্তু একেবারেই পরিকল্পিত নয়। এটা ঠিক ওঁরা দুজনেই খুব ভাল বন্ধু এবং দুজনেই খুব ভাল অভিনেতা। তবে বন্ধুত্বের থেকেও বেশি, নিঃসন্দেহে ওঁদের চরিত্রের প্রয়োজনেই ফিরিয়ে আনা। আমার পরের ছবিতে বা মাঝে একটা ওয়েব সিরিজ আসতে চলেছে, সেখানে অন্যান্য মুখ দেখা যাবে।
তবে ছবির ক্ষেত্রে বলি, আমার দ্বিতীয় ছবি 'হৃদয়পুর'-এ আরও বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং নাম যুক্ত হতে চলেছেন।
প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, 'হৃদয়পুর'-এ বড় কোনও নাম যুক্ত হতে চলেছে?
সৌম্যজিৎ: হ্যাঁ, একেবারেই ঠিক কথা। তবে এখনই তাঁর নাম বলছি না। খুব তাড়াতাড়িই তাঁর সঙ্গে শেষ দফার কথাবার্তা শেষ হলেই নাম ঘোষণা করব।
প্রশ্ন: তবে সেই অপেক্ষায় রইলাম। একইসঙ্গে আপনার ওয়েব সিরিজের কাজও চলছে?
সৌম্যজিৎ: ওয়েব সিরিজ আমরা করলাম 'সন্ধে নামার পরে'। ওখানে সোমরাজ মাইতি, অমৃতা চট্টোপাধ্যায়, প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়, ঐশ্বর্য সেন ও রানা বসু ঠাকুর। তাছাড়াও অনেকেই আছেন। থ্রিলার ঘরানার একটা সিরিজ। খুব তাড়াতাড়ি, হয়তো মে মাসেই, বাকি বিস্তারিত তথ্য ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: Shiboprosad on Fatafati: 'ফাটাফাটি'-র জন্য শারীরিক ঝুঁকি নিয়েছে ঋতাভরী, বলছেন শিবপ্রসাদ
প্রশ্ন: এরপর কোনও ছবির পরিকল্পনা রয়েছে?
সৌম্যজিৎ: 'হৃদয়পুর'-এর মুহরৎ হয়ে গেছে। ওটার শ্যুটিং আগে শেষ করব। তারপর আরও একটা গল্প লেখা চলছে। মানে সেটা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সব ঠিক থাকলে অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ শ্যুটিং শুরুর ইচ্ছে আছে।
প্রশ্ন: সেটাও কি প্রেমের গল্প?
সৌম্যজিৎ: না, ওটা একেবারেই প্রেমের গল্প নয়। অন্য ধরনের একটু। 'সিট-কম' ঘরানার।
আপাতত তিনি ব্যস্ত 'হৃদয়পুর'-এর শ্যুটিং নিয়ে। প্রেম ও প্রতিশোধের মায়াজালে দর্শককে বুঁদ করতে তৈরি হচ্ছেন সৌম্যজিৎ আদক।