কোভিড পরিস্থিতিতে অবসাদ? মনখারাপ কমাতে হেল্পলাইন চালু করছেন ঋতাভরী


 


কলকাতা: করোনা.. সংক্রমণ.. মৃত্যু.. কোভিডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। পজিটিভিটি রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা। সবার যেন মনখারাপ। অনেকেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। অনেকেই আবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে ঘরবন্দি। সুস্থ হওয়ার জন্য প্রয়োজন মন ভালো রাখা। এই বিশ্বাস থেকেই কোভিড যোদ্ধাদের মন ভালো রাখার দায়িত্ব নিচ্ছেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। মঙ্গলবার অর্থাৎ আগামীকাল থেকে চালু হচ্ছে হেল্পলাইন নম্বর 'হিল উইথ মি'। ফোনের ওপারে থাকবেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, আর এপারে আপনি!


করোনা পরিস্থিতিতে মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন অনেক টলি তারকারাই। অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থেকে শুরু করে সেফ হোম ইত্যাদি বিভিন্ন প্রয়োজনের ব্যবস্থা করেছেন অনেকেই। সম্প্রতি ভ্যাকসিনেসনের ব্যবস্থা করেছিলেন ঋতাভরীও। কিন্তু অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন, যাঁরা কোভিডের সঙ্গে লড়াই করছেন, তাঁদের মানসিক খেয়ালও রাখতে হবে। সেই ভাবনা থেকেই 'হিল উইথ মি' শুরু। এবিপি লাইভকে ঋতাভরী বললেন, 'সহায়তা ক্লিনিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমি আর আমার বন্ধু রাহুল দাশগুপ্ত এই উদ্যোগ নিয়েছি। দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে যে কেউ আমাদের হেল্পলাইন নম্বর 18002039865 -তে ফোন করতে পারেন। অভিজ্ঞ মনোবিদরা থাকবেন ফোনের ওপারে।'


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেকেই প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। ঋতাভরী বলছেন, 'আমরা সবাই একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কারোও মন ভালো নেই। অনেকে প্রিয়জনকে হারিয়েছি। অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে বন্দি রয়েছেন। হয়তো কাছের মানুষের শেষকৃত্যটুকুও করতে পারেননি। এগুলো মনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। আমি সবাইকে কেবল এই বার্তা দিতে চাই যে আমরা একা নই। অনেকসময় বাড়ির মানুষদের কাছে মন খুলে কষ্টের কথা বলা যায় না। তখন অচেনা মানুষের সঙ্গে কথা বললে মন হালকা হয়। করোনার প্যানিকে কত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। যদি মনোবিদদের সঙ্গে কথা বলে অন্তত কিছু মানুষ স্বস্তি পান সেটাই পাওনা।'


এই উদ্যোগের সমস্ত খরচ জোগাচ্ছেন ঋতাভরী আর রাহুলই। যদি বেশি মানুষ ফোন করতে শুরু করেন, তাহলে মনোবিদদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।


করোনা ও ইয়াস পরিস্থিতিতে অনেকেই ত্রাণ পাঠিয়েছেন। ঋতাভরীর এই অভিনব উদ্যোগ কোন ভাবনা থেকে? অভিনেত্রী বললেন, 'আমাদের দেশে মানুষ এখনও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ নয়। আমিও ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছি। তবে সেটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলাখুলি কথা বললে তবেই মানুষ সচেতন হবেন। আমরা চাই, এই কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের মন থেকে মৃত্যুভয় কেটে যাক। কারও যেন মনে না হয় লড়াইটা একার! আমরা সবাই সঙ্গে আছি।'