বিনোদন ডেস্ক, এবিপি আনন্দ: 'মডার্ন লাভ মুম্বই' (Modern Love Mumbai) আমাজন প্রাইমে (Amazon Prime) মুক্তি পেয়েছে। মোট ছ’টি গল্পের অ্যান্থোলজি (Anthology) সিরিজ এটি।
কেমন হল 'মডার্ন লাভ মুম্বই'?
এই সিরিজের প্রথম গল্পটির নাম 'রাত রানি' (Raat Rani)। সোনালি বসুর পরিচালনায় 'রাত রানি'তে অভিনয় করেছেন ফতিমা সানা শেখ। মুম্বইয়ে একজন কাশ্মীরী মহিলার এক দশকের বিবাহিত জীবন থেকে হঠাৎ একদিন একলা হয়ে যাওয়ার গল্প বলে এই ছবি। একটা ভাঙাচোরা সাইকেল আর ছাদ ভাঙা এক কামরার ঘরকে সম্বল করে লালি এগিয়ে চলে। সম্পর্ক ভাঙার অভিঘাতে সে প্রথমে রেগে যায়, তারপর একসময় ভেঙে পড়ে। কিন্তু সময় মানুষকে বদলায়। ধীরে ধীরে ‘একলা চল রে’-র নীতিই আঁকড়ে ধরে লালি। একাকিত্বের সঙ্গে মানিয়েও নেয়।
এহেন লালিই একদিন সাইকেল চালিয়ে মুম্বই সি-লিঙ্ক পেরিয়ে যেতে যেতে জীবনে স্বাধীনতার স্বাদ পায়। সেই সি-লিঙ্ক যেখানে পথচারী আর দু’চাকা চালানো ‘নট অ্যালাওড’। লালি ভারতের অসংখ্য নাম না জানা সাধারণ মহিলার স্বাধীনতা স্পৃহা, রোজকার জীবনযুদ্ধের প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। সমাজের সমস্ত 'না' কে 'হ্যাঁ' তে পরিণত করতে পারা সেই সমস্ত নারীদের গল্প বলেন পরিচালক সোনালি বসু, অভিনেত্রী ফতিমা সানা শেখ। শুধুমাত্র জীবনীশক্তি আর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীকে সম্বল করে 'নট অ্যালাওড'-এর লক্ষ্মণরেখা কীভাবে ভাঙা যায়, ভেঙে চলেছেন এদেশের মহিলারা তার এক জীবন্ত উদাহরণ হয়ে ওঠে লালি।
ফতিমার অভিনয় শুরুতে অতিরঞ্জিত মনে হলেও গল্প যত এগোবে, বোঝা যাবে যে লালির মত চরিত্রের দুটো শেড আলাদা করতে সফল হয়েছেন অভিনেত্রী। সোনালি বসু ‘আমু’ থেকে শুরু করে ‘মার্গারিটা উইথ আ স্ট্র’, ‘স্কাই ইজ পিঙ্ক’... সমস্ত সিনেমায় নারীর ক্ষমতায়নের ধারাবাহিকতা 'রাত রানি'তেও বজায় রেখেছেন। কোনওরকম জার্গন, সিরিয়াস স্টেটমেন্ট ব্যবহার না করেও যে ছবির মাধ্যমে নারী-স্বাধীনতার বার্তা দেওয়া যায় আবারও প্রমাণ করলেন সোনালি।
এই অ্যান্থোলজি সিরিজের আর পাঁচটি গল্প আবর্তিত হয়েছে সমকামী, অসমবয়সী, ভিন-জাতির মধ্যে সম্পর্ককে ঘিরে। তাতে অভিনয়ও করেছেন বড় বড় অভিনেতা, অভিনেত্রীরা। কিন্তু কোনও গল্পই দর্শকের মনে তেমন দাগ কাটতে পারে না। নিউইয়র্ক টাইমসের কেসস্টাডিকে মুম্বইয়ের প্রেক্ষাপটে এনে ফেলা হয়েছে। শহর মুম্বই কোনও পরিচালকের ছবিতেই চরিত্র হয়ে উঠতে পারেনি, যেটা এই অ্যান্থোলজিতে অনায়াসেই করা যেত। হংসল মেহতা, অলঙ্কৃতা শ্রীবাস্তব, বিশাল ভরদ্বাজের মত প্রথম সারির পরিচালকদের কাছে যে প্রত্যাশা দর্শকদের ছিল, তা পূরণ হয়নি, বলাই যায়।