তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: বড়পর্দা থেকে শুরু করে ছোটপর্দা, ওয়েব সিরিজ.. সব জায়গাতেই অবাধ যাতায়াত তাঁর। বয়স বাড়লেও তার হিসেব রাখতে নারাজ তিনি। এমনকি অবলীলা 'ভুল' বলে দেন নিজের জন্মদিনকেও। পরিচালকেরা বলেন, কখনও নাকি নতুন কিছু শেখা নিয়ে অনীহা নেই এই অভিনেতার। নিজেও অবশ্য তাইই মনে করেন তিনি। আর তাই.. তাঁর সহ-অভিনেতারা যতই নবীন হোক না কেন, তিনি তাঁদের সঙ্গে মিশে যান সহজেই। স্বচ্ছন্দ্যে কাজ করেন নতুন পরিচালকদের সঙ্গে। পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Paran Banerjee)।  সৌম্যজিৎ আদকের (Soumojit Adak) নতুন ছবি 'তিলোত্তমা'-য় নীল ভট্টাচার্য্য় (Neel Bhattacharyya) ও তৃণা সাহা (Trina Saha)-র সঙ্গে কাজ করেছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। 


ছবিতে তাঁর তুলনায় বাকিরা অনেকটাই নবীন। কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল নীল-তৃণাদের সঙ্গে কাজ করার? প্রবীণ অভিনেতা বলছেন, 'আমি কাজের ক্ষেত্রে নবীন-প্রবীণের পার্থক্য রাখি না। মনেও হয় না এইসব। আর আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষা আর অভিজ্ঞতার জন্য বয়সে প্রবীণ হওয়ার প্রয়োজন হয় না। শিক্ষা যে কোনও সময়ে, যে কোনও জায়গায় পাওয়া যায়। আমি কখনও মনে করি না আমার সব শেখা হয়ে গিয়েছে আর ওঁর অনেক বাকি। সবসময়ে সতর্ক থাকি আমি, নতুন করে কিছু পাবার আসায়। দ্বিতীয়ত, আমি যাঁদের সঙ্গে অভিনয় করি, তাঁরা আমার থেকে ছোট হলেও আমি সেভাবে দেখি না। আমি ভাবি, একটা ছবি হবে বা নাটক হবে। আর সেটা সবাই মিলে আমরা করব। এটা একটা সমবেত শিল্প, একজন ব্যক্তি-মানুষের কাজ নয়। এক তালে, এক সুরে সবাই গাইলে তবেই সুন্দর কাজ হবে। আমি সেই চেষ্টাই সবসময় করি। নতুনেরাও আমায় সাহায্য করেন। সেখানে আমার কোনও বিহ্বলতা কাজ করে না। বরং আমি নবীনদের নিয়ে কাজ করতে ভালবাসি। ওরাও তো আমায় ভালবাসে।'


যখন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন, সেই সময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করা বেশি কঠিন ছিল নাকি এখন, সোশ্যাল মিডিয়ার জুগে প্রতিযোগিতা বেড়েছে? একটু হেসে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, 'এই বিষয়টা নিয়ে আমি কোনোদিন ভাবিনি। জায়গা তৈরি আবার কি! আমি থিয়েটারের মানুষ। এরপরে আমার কাছে ধারাবাহিকের অফার এল। সেই সময়ে দুর্দান্ত সব সিরিয়াল হত। আমার কাজ শুরু করে বেশ ভালই লাগল। তারপরে দেখলাম, প্রচার হচ্ছে, নাম হচ্ছে, লক্ষ্মীও ঘরে আসছে। আমি বিশ্বাস করি, জায়গা নিজেই হয়ে যায়। জায়গা তৈরি করার চেষ্টা করা হলেই, সেটা হারিয়ে যায়। ছোটবেলা থেকে আমি তো স্বপ্ন দেখতেই শিখিনি। দেখব কখন? সময়ই তো পাইনি।'


কেবল অভিনেতারা নন, পরিচালকও নবীন। তাঁর সঙ্গে কাজ করার কেমন অভিজ্ঞতা হল পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের? অভিনেতা বলছেন, 'গল্পটা আমার ভীষণ ভাল লেগেছিল। আবেগ আছে, ভাবনা ভাল। কিন্তু সংলাপ দুর্বল বলে মনে হয়েছিল আমার। পরিচালককে প্রশ্ন করেছিলাম, আবেগটা বুঝে নিজের মতো করে সংলাপ বলতে পারি কি না? উনি ভীষণ খুশি হয়েই রাজি হয়ে যান। এরপরে আমি বলেছিলাম, চিত্রনাট্যে একটা জায়গায় একটু খালি খালি লাগছে। ওখানে একটা দৃশ্য ঢোকানো দরকার। পরিচালক আমার থেকেই জানতে চাইল, কেমন দৃশ্য রাখা যায়? আমি বললাম, 'কাল লিখে নিয়ে আসবক্ষণ'। সেই মতো দৃশ্য লিখে নিয়ে এলাম। সেটা শ্যুটিংও হল। ঠিক এভাবেই আমি যেখানে কাজ করতে যাই, সবাই আমায় ভালবাসেন। আমিও কাজটা করি ভালবেসে। আসলে অভিনয়টাকে ভীষণ ভালবাসি তো।'


আরও পড়ুন: Tollywood New Film: কৌশানীকে নিয়ে বোলপুরে শ্যুটিং শুরু হল শিবপ্রসাদ-নন্দিতার 'বহুরূপী'-র


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।