কলকাতা: নির্বাচন শেষ। শেষ শপথ গ্রহনও। ভোটের মুখে আক্ষরিক অর্থেই তারকাখচিত হয়ে উঠেছিল রাজনৈতিক মঞ্চগুলি। প্রায় ২ মাস পরে আবার নিজের কাজে ফিরছেন তারকারা। 'নির্বাচন খানিকটা দুর্গাপুজোর মত। এক একজন নিজেদের থিম অনুযায়ী মণ্ডপ সাজান। পুজোর প্রচার করেন। প্রতিযোগীতাও চলে। কেউ প্রথম হয়.. কেউ দ্বিতীয়। প্রতিমা নিরঞ্জন হয়ে গেলে আবার সবাই নিজের কাজে ফেরে। আমিও যেমন এবার শ্যুটিং ফ্লোরে ফিরব।' বললেন রুদ্রনীল ঘোষ।
ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিরোধী প্রার্থী থেকে শুরু করে বন্ধুদেরও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক সৌজন্যের সেই পোস্ট এখনও জ্বলজ্বল করছে তাঁর ফেসবুক ওয়ালে। কিন্তু এবার আবার শ্যুটিং ফ্লোরে ফিরবেন অভিনেতা। রুদ্রনীল বলছেন, 'নির্বাচনে প্রচারে খুব ব্যস্ত ছিলাম এই কয়েকটা মাস। হাতে কোনও কাজ নিয়ে পারিনি। রাজনৈতিক বিভিন্ন দায়িত্ব সামলাতে হত। কিন্তু এবার জীবিকার কাছে ফেরা। অভিনয় আমার পেশা। ছবি নির্মাতারাও এই কয়েকটা মাস নতুন কিছু পরিকল্পনা করতে পারেন নি। নির্বাচনের কাছে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন টলিউডের প্রচুর তারকা। এখন সবার ব্যস্ততা কেটেছে। নির্মাতারাও সেটা জানেন। এবার তাঁরা পরিকল্পনা শুরু করবেন।' সেইসঙ্গে অভিনেতা যোগ করলেন, 'করোনার সময় খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি। প্রচুর ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এখন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে একসঙ্গে কাজ করার জন্য। তবেই তো আবার পুরনো জায়গাটা ফিরবে।'
রাজনীতির মঞ্চে জয় শ্রী রাম ধ্বনি তোলা রুদ্রনীল অভিনেতা রুদ্রনীলের অনুরাগীদের কাছে বেশ অচেনা। এরপর অভিনেতাকে কোন ভূমিকায় দেখা যাবে? রুদ্রনীল স্পষ্ট বললেন, 'এখন অভিনয়েই ফোকাস করতে চাই। ভালো কাজ করতে চাই। তবে আমার রাজনৈতিক সত্ত্বাটা ভুলে যাব না।' ইন্ডাস্ট্রিতে রুদ্রনীল ঘোষ, রাজ চক্রবর্তী আর কাঞ্চন মল্লিকের বন্ধুত্বের কথা কারোও অজানা হয়। ফেসবুক পোস্টে রুদ্রনীল শুভেচ্ছাও জানিয়েছিলেন তাঁদের। বন্ধুদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা হয়েছে? অভিনেতা বললেন, 'সোশ্যাল মিডিয়ায় নম্বর ছড়িয়ে পড়ার পড়ে আমাদের সবার কাছেই প্রচুর ফোন আসছে। আর বেশিরভাগ ফোনই সাহায্যের জন্য নয়। কাজেই প্রায় প্রত্যেককে নম্বর বদলাতে হয়েছে। শুভশ্রীর (শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়) নম্বর একই থাকায় ওর মাধ্যমে রাজের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওকে জয়ের শুভেচ্ছাও জানিয়েছি। তবে কাঞ্চনের ফোন বন্ধ। নতুন নম্বর নিলে ওর সঙ্গেও কথা হবে।'
রাজনীতির মঞ্চ থেকে একাধিকবার আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী দলের হয়ে। শ্যুটিং ফ্লোরে দেখা হলে কী বন্ধুত্বে রাজনীতির ছায়া পড়বে? 'বন্ধুত্ব এত ঠুনকো নয়। একটা ধারণা রটিয়ে দেওয়া হয় যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য় মানেই ব্যক্তিগত শত্রুতা রয়েছে। একেবারেই তা নয়।' হাসলেন রুদ্রনীল। তারপর বললেন, 'যে কোনও সচেতন মানুষই রাজনৈতিক বিশ্বাস আর ব্যক্তিগত সম্পর্ককে আলাদা রাখতে জানেন। শুধু রাজ-কাঞ্চন কেন, দেবদূত ঘোষও তো আমার খুব ভালো বন্ধু। রাজনৈতিক বিশ্বাস আলাদা বলে কখনও চিড় ধরেনি আমাদের বন্ধুত্বে।'
একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে নতুন সরকারের কাছে কী আশা করেন? 'পশ্চিমবঙ্গের মানুষ শান্তি চায়। ভালো থাকতে চায়। রাজ্যে শান্তি বজায় থাকুক। ব্যাস.. এটুকুই।' বললেন রুদ্রনীল।