মুম্বই: ২০০০ কোটি টাকার ড্রাগ মামলায় অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নিকে ফেরার ঘোষণা করল আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরেও কোনও সাড়াশব্দ করেননি মমতা। এরপর থানে ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাঁকে ফেরার ঘোষণা করে।

পুলিশ জানিয়েছে, আদালতের সামনে হাজির হতে আরও ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে মমতাকে। এরপরেও তিনি হাজির না হলে তাঁর সম্পত্তি ক্রোক করা হতে পারে, জারি হতে পারে রেড কর্নার নোটিশ।

৯০-এর দশকে বলিউডের নামী তারকা ছিলেন মমতা কুলকার্নি। কিন্তু ২০০০ সালে আচমকা বলিউড ছেড়ে বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। ১২ বছর পর তাঁর একটি ছবি সামনে আসে। তখন তিনি মাফিয়া ডন ভিকি গোস্বামীর ঘরণী। এই ভিকির আসল নাম বিজয়গিরি গোস্বামী, সে গুজরাত পুলিশের এক সময়ের ডিএসপি আনন্দগিরি গোস্বামীর ছেলে। দ্রুত পয়সা কামাতে দুর্নীতির পথ বেছে নেয় ভিকি। প্রথমে বেআইনি মদ, তারপর ড্রাগের কারবার। গুজরাত ছেড়ে সে চলে আসে মুম্বই। আলাপ হয় ড্রাগের নেশায় চুর বেশ কয়েকজন বলি স্টারের সঙ্গে। মমতার কেরিয়ার তখন পশ্চিমে ঢলছে, ফ্লপ হয়েছে চায়নাগেট। তখনই তাঁর সঙ্গে জেলবন্দি ভিকির ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে, হাত থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে একের পর এক ছবি। ২০০০ সালে তিনি দুবাই চলে যান জেলবন্দি ভিকির সঙ্গে দেখা করতে। ভিকিতে মুগ্ধ মমতা ঠিক করেন, তাঁকে জেল থেকে বার না করে তিনি ফিরবেন না।



দুবাইয়ে ভিকির সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন তিনি। ২০০২-এ মুক্তি পায় তাঁর শেষ ছবি কভি তুম, কভি হাম। যদিও তার ঢের আগে বলিউড থেকে তিনি গায়েব হয়ে গিয়েছেন।

সাজা কমানোর জন্য ইসলাম গ্রহণ করে ভিকি। দেখাদেখি মমতাও। ১৫ বছর জেল খাটার পর ২০১২-র নভেম্বরে জেল থেকে ছাড়া পায় ভিকি ওরফে ইউসুফ আহমেদ। তার ১০ বছরের সাজা মকুব হয়। মমতা ওরফে আয়েষা বেগমের সঙ্গে কেনিয়া পাড়ি দেয় সে। সেখানে ভিকির কপাল খোলেনি, শিগগিরই গ্রেফতার হয়। তার সঙ্গে আটক হন মমতা কুলকার্নিও।

গত বছর এপ্রিলে থানের শোলাপুরের এক কারখানা থেকে ১৮ টন নিষিদ্ধ ড্রাগ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। জানা যায়, ভিকি গোস্বামীর সঙ্গে এই চক্রের যোগ রয়েছে। তখন থেকেই তদন্ত শুরু হয় ড্রাগ মামলায় মমতার ভূমিকা নিয়ে। অভিযোগ, কেনিয়ায় এখনও চলছে ভিকির ড্রাগের কারবার, মমতাও রয়েছেন তাঁর সঙ্গে।