কলকাতা: গানের সঙ্গে যখন মেশে শ্রোতার কল্পনা, সেখানেই তো স্বার্থকতা পায় শিল্প। ঠিক এই ভাবনা নিয়েই নিজের নতুন অ্যালবামের ৮টি গান বিভিন্ন বিভাগের শিল্পীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন অনুপম রায় (Anupam Roy)। সেই গানে নিজের কল্পনা মিশিয়ে কেউ তৈরি করলেন ভাস্কর্য্য, কেউ আবার ফ্রেমবন্দি করলেন তাঁদের ভাবনাকে। গান ধরা দিল চর্মচক্ষে। কলকাতার বুকে অনন্য এক প্রদর্শনীতে মুক্তি পেল অনুপমের নতুন গান 'অদৃশ্য নাগরদোলা ট্রিপ'। 


ইতিমধ্যেই ৩টি গান মুক্তি পেয়েছে ইউটিউব সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে। নতুন অ্যালবাম নিয়ে খোদ শিল্পী এবিপি লাইভের (ABP Live)-এর মুখোমুখি হয়ে বললেন, 'এখন একদিনে অ্যালবাম মুক্তি হয় না। আমার নতুন অ্যালবাম অদৃশ্য নাগরদোলা ট্রিপের ৩টি গান ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে। 'কেমন আছো অ্যানি হল', 'অবশ' এবং 'বিচার'। এই অ্যালবামটির মূল বিষয় ইলিউশন। আছে অথচ নেই, এমন এক মায়া। এই মায়াটাকে ধরার জন্য আমি ৮টা গান আমার ৮জন শিল্পী বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। সেই সুরকে ভর করে আমার শিল্পী বন্ধুরা কেউ ছবি এঁকেছেন, কেউ ছবি তুলেছেন, কেউ বা বানিয়েছেন বিভিন্ন ভাস্কর্য্য। আর তাই দিয়েই আমরা ভরিয়ে তুলেছি কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভির এই আর্ট গ্যালারি। এখানে আজকে থেকে একটা প্রদর্শনী চালু হল। আজ আমার সমস্ত বন্ধুরা এসেছিলেন এই অ্যালবাম ও অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে। আগামী ২ দিন এই প্রদর্শনী চলবে। দুদিন আমার এই অ্যালবাম নিয়ে থাকবে আমার লাইভ পারফর্মেন্সও। প্রত্যেকটা গান তৈরি হয় ভাবনা নিয়ে। সেই ভাবনাকেই আমি বিস্তারিতভাবে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি সবার মধ্যে। সেগুলোই বিস্তারিতভাবে ধরা পড়েছে। এটা আমার তরফ থেকে কলকাতাকে একটি উপহার। রিচা ও কৌন্তেয়র জন্যই এই অনুষ্ঠানটি সম্ভব হয়েছে। দর্শন নতুন গানগুলি শুনুক, নিজেদের মতো করে অনুভব করুক। আমার কথা আমার সুর সব তোমাদের জন্য রইল।'


আরও পড়ুন: Anupam Roy Exclusive: কলকাতাকে ভালবাসার উপহার অনুপমের, সুর-শিল্পের মিশেলে 'অদৃশ্য নাগরদোলা ট্রিপ'


আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Shirsendu Mukherjee) সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherjee), কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (Kaushik Ganguly), চূর্ণি গঙ্গোপাধ্যায় (Churni Ganguly), সোহিনী সরকার (Sohini Sarkar), ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty), সুজয়প্রসাদ (Sujoy Prashad) ও অন্যান্যরা। অনুপমর কথা বলতে গিয়ে পরিচালক কৌশিক বলেন, 'অনুপমের যখনই প্রশংসা করা হয়, ও মাথা নীচু করে থাকে। মনে হয় ওর মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করে। এই অপরাধবোধ মানুষের জীবনে ঢুকে পড়ার। ওর গানের মধ্যে নিয়ে হাজার হাজার মানুষের ঘরের কথা বলে ফেলার।' সৃজিত বলেন, 'এই অনুপম প্রয়াসকে স্বাগত। কলকাতার মধ্যেও একটুকরো দিল্লি বা লন্ডনকে তুলে ধরার প্রয়াস বেশ অন্যরকম।' শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, 'অনুপম আমাদের সবার খুব স্নেহের। একটা নতুন জিনিস আজ দেখলাম। শিল্প এবং সুরের নতুন এই মেলবন্ধনের প্রয়াস বেশ নতুন ধরনের একথা বলতেই হবে।' সোহিনী বলেন, 'জীবনে যতবার প্রেম ভেঙেছে এই মানুষটারই গান শুনেছি। চোখের জলে বালিশ ভিজিয়েছি, আর পাশে চলতে থেকেছে এই মানুষটার গলা।'



এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল 'কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভি'। এই জায়গাটি তৈরি করার ভাবনা রিচা আগরওয়ালের। তিনিও হাজির ছিলেন অনুপমের সুরেলা অনুষ্ঠানে। শিল্পীরা প্রশংসা করেন কলকাতার বুকে এমন একটি অন্য স্বাদের জায়গাকে তুলে ধরার পিছনে তাঁর প্রয়াসের। আর রিচার কথায়, 'পরিবারের থেকে শিখেছি, একমাত্র ভালবাসাই আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি। খুব ভালবেসে, ভাবনাচিন্তা করে, কলকাতার বুকে অন্যস্বাদের এই জায়গাটি তৈরি করা। অনুপমের প্রদর্শনীতে খুব সুন্দর করে সেজে উঠেছে কেসিসি।'