কলকাতা: পুজোতেই যেন মিটছে মা বিষাদ। কমছে না ক্রোধ। গণেশ চতুর্থীর আগে, নিজের হাতে গণেশ মূর্তি বানিয়েছিলে অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Auddy)। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি শেয়ার করে নিয়েছেন তিনি। সঙ্গে লিখেছেন আরজি কর কাণ্ডের কথা, লিখেছেন ন্যায়বিচারের কথা। 


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ পোস্ট করে অপরাজিতা আঢ্য লেখেন,  'বঙ্গজীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছেন যে গণপতি, তার সঙ্গে চতুর্থীর চেয়ে, হালখাতাকে মিলিয়ে ফেলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ্য অধিকাংশ বাঙালী। হিন্দু পুরাণের সিদ্ধিদাতা যে ঠিক কোন লোকগাথার পাল্লায় পরে বাঙালীর একান্ত আপন স্থূলকায় ব্যবসায়িক প্রতীক হয়ে গেলেন, তার ইতিহাস সাংস্কৃতিক ভাবে দীর্ঘ ও জটিল! তবে আজ যে সময়ে দাঁড়িয়ে গণেশ চতুর্থী এসে দরজায় কড়া নাড়ল, তখন ব্যবসা শব্দটা শুনলেই গা টা ঘিনঘিনিয়ে উঠছে! শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, সবকিছু নিয়ে যে ব্যবসার আসর সারা বাংলার ভাগ্যাকাশে, বারংবার মনে হচ্ছে আজ সিদ্ধিদাতাকেই প্রয়োজন! সিদ্ধি অর্থে প্রজ্ঞা, নৈতিক আদর্শ, চেতনার উন্মেষ, সিদ্ধি অর্থে কোথাও গিয়ে আজকের সময়ে সমষ্টিগত নবজাগরণ এবং আত্মবিশ্লেষণ- ও বৈকি! আমার কাছে এগুলোই তো প্রকৃত সম্পদ! অন্তত তেমনটাই হওয়া উচিত! কিন্তু কোথায়, কোথায় এমন সিদ্ধির প্রতিফলন! ক্ষমতাশীল চেয়ারের নিচে অরাজকতার মূষিক (পড়ুন ইঁদুর) কুট কুট করে কেটে ছিন্নভিন্ন করছে সমাজ… সিদ্ধিদাতা কোথায়?! মস্তিকের অন্ধকারে মানবিকতার লেশমাত্র দেখিনা রাষ্ট্র নামক যন্ত্রের সামনে। এই কী সংস্কৃতি? বঙ্গীয় বৈভব? বিশ্ববাংলার আস্ফালন?! গণতন্ত্রের গণেশ উল্টে গেছে খুন, কারচুপি, ধর্ষণের আড়ালে সে তো কবেই! তবে আর কিসের প্রজ্ঞা? কি বা সিদ্ধিদাতার উদযাপন? শুধু ব্যবসা?! তার বাইরে বাকি গুলো নাহলেও চলবে? সুখ করণীয়, দুখ হরণীয় গণপতি তুমি কী দেখছ না, তোমার কোটি কোটি সন্তান আজ রাজপথে, শুধু একটু নৈতিকতার আশায়?! প্রার্থনা, প্রার্থনার চেয়ে বড় সত্যি আমার কাছে কিছুই নেই, তাই প্রার্থনা করি, এই সমষ্টিগত মহা দুঃসময় যেন কাটিয়ে উঠি আমরা, অন্ধকার যেন নিপাত যায় অতিব নির্লজ্জতায় সিদ্ধিরূপী, ন্যায়রূপী মহান আলোর সামনে! আমার গণপতির পরনে চিকিৎসকের এপ্রন, তাতে ধর্ষকদের হাতের রক্ত ছাপ; গণেশের কোলে সেই অন্তঃসত্বা হস্তিনী যার নৃশংস খুন মন থেকে মুছে ফেলতে পারিনা কিছুতেই! যখন এই মূর্তি তৈরী করছিলাম, সাবলীল ভাবেই অন্তরের আর্তনাদগুলো উৎসর্গ করেছি গণেশের মঙ্গলক চরণে, মঙ্গল কামনায়, সার্বিক সিদ্ধির আশায়। নিশিদিন সব কিছু হোক তিলোত্তমার, হোক সেই প্রতিটি অবহেলিত জীব কূলের যাদের মানুষ বা মনুষ্যেতর বিভেদ নেই তোমার কাছে। হে গণপতি, শুধু ব্যবসায়িক প্রতীক নয়, তুমি ন্যায়রূপ সিদ্ধি দান করো; এই সম্পদ আজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়।' (অপরিবর্তিত)


আরও পড়ুন: Woman Harassment at Tollywood: ‘সুরক্ষা বন্ধু’ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে একাধিক অসচ্ছতার অভিযোগ, কী দাবি জানাচ্ছেন পরিচালকেরা?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।