কলকাতা: অনেক ছোটবেলাতেই বুঝে গিয়েছিলেন, তাঁর বাবার পেশাটা অন্যদের থেকে একটু আলাদা। স্কুলে বন্ধুদের মধ্যে আলোচনা হত। ছোট থেকেই তারকা, নায়ক এই শব্দগুলোতে ঘোর আপত্তি ছিল তাঁর। মনে হত, বাড়িতে তো সবকিছু খুব স্বাভাবিক, আর পাঁচটা পরিবারের মতোই। তাহলে কেন বাইরের থেকে মানুষের কাছে অন্যরকম রাখে জীবনটা? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবার জুতোতেই পা গলিয়েছেন ছেলে। তিনিও বাবা হয়েছেন। পিতৃত্বকে নিজে অনুভব করেছেন। 'ফাদার্স ডে'-তে এবিপি লাইভকে বাবার গল্প, বাবা হওয়ার গল্প শোনালেন অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী (Arjun Chakraborty)। 


বাবা সব্যসাচী চক্রবর্তীর (Sabyasachi Chakraborty) মতোই অভিনেতা, একরত্তি কন্যা অবন্তিকার জন্য 'ভালো বাবা' হয়ে উঠতে পারছেন অর্জুন? অভিনেতা বললেন, 'ছোটবেলা থেকেই বাবা আমার আর দাদার রোল মডেল। সবসময়েই মনে হয় ঠিক বাবার মতো হতে পারব না কখনও। অবন্তিকা এখনও খুব ছোট্ট, মাত্র ৪ বছর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ বদলাবে, ওর পড়াশোনা জীবনযাত্রা বদলাবে। একদিনে তো বাবা হওয়া শেখা যায় না। আমি রোজ নতুন করে বাবা হওয়া, ছেলে হওয়া, স্বামী হওয়া শিখি। তবে আমি নিজে বাবাকে সবসময় পেয়েছি। কাজে ব্যস্ত থাকলেও উনি পরিবারের জন্য ভীষণ সময় দিতেন। কখনও এমন মনে পড়ে না যে বাবার কথা মনে পড়েছে অথচ বাবা আসেননি, ওনাকে পাইনি। বাবা হিসেবে, শিক্ষক হিসেবে, বন্ধু হিসেবে সবসময় ছিলেন, আছেন। আমিও অবন্তিকার জন্য সেটাই চেষ্টা করি।'


আরও পড়ুন: Sreelekha on Fathers' Day: 'বিশ্বাস করি, আমাদের আবার দেখা হবে', ফাদার্স ডে-তে মনখারাপি পোস্ট শ্রীলেখার


অভিনেতাদের কাজের সূত্রে বাইরে যেতে হয়। কখনও বিশেষ দিনে শ্যুটিং করার জন্য পরিবারের থেকে দূরে যেতে হয়েছে বাবা-ছেলেকে? অর্জুন বলছেন, 'বাবা খুব চাপা স্বভাবের। মনখারাপ হলেও বলেন না। তবে নিশ্চয়ই অনেক বিশেষ দিনে থাকতে পারেননি বাবা। তবে কখনও মুখ ফুটে মনখারাপের কথা বলেননি। হয়তো কথায় কথায় বলেছেন, 'ওই সময় আমি ছিলাম না, তোমাদের মা-ই সব করেছেন।' এইটুকুই। তবে আমার সদ্য একবার এই ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালেই। অবন্তিকার জন্মদিনের সময়ে আউটডোর শ্যুটিং। সেইদিনটা এক্কেবারে কাজ করতে ইচ্ছা করছে না, কিন্তু কিছু করার নেই। কলকাতায় থাকলে আমি সবসময় বিশেষ দিনগুলো পরিবারের সঙ্গে কাটানোর চেষ্টা করি। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী.. ঠিক যেমন আমাদের জন্মদিনের সময় খইব্যাগ ফাটানো.. বাবা-মা দুজনেই থাকতেন। আমিও অবন্তিকার সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করি। ওর গরমের ছুটিতে গোয়া আর রাজস্থান ঘুরে এলাম।'


বাবার থেকে কী ছোটবেলার সঙ্গে মা বেশি জড়িয়ে? অর্জুন বলছেন, 'বাবাকে জন্ম থেকেই অভিনয় করতে দেখেছি। মা যখন অভিনয় শুরু করেছেন তখন আমার বয়স ১০। কিন্তু বাবাকে পাচ্ছি না এই অনুভূতি কখনও হয়নি। জানতাম বাবা আছেন সবসময়ের জন্য। আমিও বাবা-মায়ের থেকে এই শিক্ষাটাই পেয়েছি। ঠিক যেমন আজ শ্যুটিং নেই। তাই 'ফাদার্স ডে'-টা বাড়িতেই। অবন্তিকার জন্য। ওকে সারা জীবন পথ দেখাব.. চিরকাল চেষ্টা করব আমার বাবার মতো বাবা হয়ে ওঠার...'