চিত্তৌঢ়গড়: পদ্মাবত মুক্তির দিন যত কাছে এগিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের পরিস্থিতি। ২৫ জানুয়ারি মুক্তির দিন ধার্য হতেই, দেশের বিভিন্ন বিজেপিশাসিত রাজ্যে পদ্মাবত মুক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এরপর ছবি নির্মাতার দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলে, আদালত দেশের সমস্ত রাজ্যে ছবি মুক্তিতে ছাড়পত্র দেয়। এরপর থেকেই আরও তীব্র হয়েছে বিভিন্ন রাজপুত সংগঠন সহ কট্টরপন্থী সংগঠনের বিক্ষোভ-আন্দোলন।

দেশের বিভিন্ন হলে বোমা রাখার হুমকি দিয়েছে কর্ণি সেনা। ভাঙচুর চালানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন হলে। এবার রাজস্থানের চিত্তৌঢ়গড়ে প্রায় ২০০ রাজপুত মহিলা গতকাল একটি স্বাভিমান মিছিল বের করেন। সেই মিছিল থেকেই ওই রাজপুত মহিলারা স্লোগান তোলেন, হয় পদ্মাবত মুক্তি বন্ধ করতে হবে, না হলে তাঁদের আত্মহত্যায় অনুমতি দিতে হবে। তাঁরা দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই আবেদন রেখেছেন।

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে রাজস্থান সরকার জানিয়েছে, আজ তারা সুপ্রিম কোর্টে গত সপ্তাহে ছবি মু্ক্তিতে ছাড়পত্র দেওয়া রায় ফের বিবেচনা করে দেখার আর্জি জানাবে। গতকালের মিছিলে থাকা রাজপুত মহিলাদের দাবি, বনশালির ছবিতে রাজস্থানের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে, সেখানকার মানুষের ভাবনায় আঘাত করা হয়েছে। যদিও এই সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে দাবি পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালির।

প্রসঙ্গত, গতকালের মিছিলটি চিত্তৌঢ়গড় দূর্গের সেই স্থান থেকে শুরু হয়েছিল, যেখানে ১৩০৩ সালে আলাউদ্দিন খীলজির হাত থেকে নিজের সম্মান বাঁচাতে প্রায় ১৬ হাজার মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছিলেন রানি পদ্মীনি। মূলত, বনশালির ১৫০ কোটির ছবিটিও পাঁচশো বছর আগে সুফি কবি, মালিক মহম্মদ জয়েশের লেখা একটি কবিতা, যেখানে চিত্তোরের রানির এই জোহ্বরব্রত পালনের কথা লেখা ছিল, তার ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে  চিত্রনাট্য।

যদিও ঐতিহাসিকদের মধ্যে রানি পদ্মীনির অস্তিত্ব নিয়েই বিতর্ক রয়েছে। অনেকে দাবি করেন, রানি পদ্মীনির কোনও অস্তিত্বই ছিল না। আবার অনেকে বিশ্বাস করেন, রানি ছিলেন, এবং তাঁর চরিত্রকে ছবিতে খারাপ আলোয় দেখানো হয়েছে।  তাই জন্যেই ছবি মুক্তিতে আপত্তি রাজপুতদের।