ঢাকা : জামিন পেলেন অভিনেত্রী পরীমণি। সাভার বোট ক্লাবের পরিচালক ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে হেনস্থা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ-মামলায় জামিন পেলেন তিনি। এদিন ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন জাজ মহম্মহ জুনেইদের এজলাসে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান অভিনেত্রী। তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এই মামলায় রবিবারই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছিল এবং আদালতে হাজির হতে অক্ষম হলে তাঁর উদ্দেশে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও অসুস্থতার কারণে আগের দিন হাজির হতে পারেননি পরীমণি। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমকে এমনই জানান ডিফেন্স কাউন্সেল ।
এর আগে গত ১৮ মার্চ সংশ্লিষ্ট ঘটনার তদন্তকারী অফিসার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের ইন্সপেক্টর মণির হোসেন অভিনেত্রী পরীমণি ও সহ অভিযুক্ত জুনেইদ বাগদাদি জিম্মির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত রিপোর্ট জমা করেন। যদিও এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ফতেমা তুজ জন্নতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। গত ১৮ এপ্রিল PBI-এর তদন্ত রিপোর্ট গ্রহণ করে আদালত এবং পরীমণিকে তলব করা হয়। ২৬ জুন তিনি আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন পান।
কী ঘটনা ?
২০২২ সালের ৬ জুলাই সাভার থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন নাসির। পিবিআইয়ের রিপোর্ট বলছে, ২০২১ সালের ৮ জুন সন্ধেয় পরীমণি, বিদ্বেষপূর্ণ অভিপ্রায়ে, অভিযোগকারী নাসিরকে ফাঁদে ফেলে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তিনি তিন লিটার ব্লু লেবেল হুইস্কি বিনামূল্যে পার্সেল হিসাবে চেয়ে বোট ক্লাবের নিয়ম লঙ্ঘন করেন। যখন তা অস্বীকার করা হয়, পরীমণি নাসিরকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তাঁকে লক্ষ্য করে অ্যাস্ট্রেও ছোড়েন। যা ব্যবসায়ীর মাথায় আঘাত করে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, কাচের বোতল এবং অন্যান্য জিনিস ছোড়েন অভিনেত্রী। যার জেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়। নাসির আহত হন কাচের টুকরোয় বুকে আঘাত লাগে। প্রাথমিক তদন্তে পরীমণির বিরুদ্ধে ৩২৩ ও ৫০৬ নম্বর ধারায় অভিযোগের প্রমাণ মেলে বলে দাবি করা হয়।
যদিও এই ইস্যুতে লেখিকা তসলিমা নাসরিন প্রশ্ন তুলছেন, '২৪-এর স্বাধীন দেশে তাঁর পায়ে কেন শিকল পরানো হচ্ছে, তাঁকে কেন মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে ? এর একটিই কারণ, তিনি নারী।' তাঁর সংযোজন, 'নারীদের পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবেই বিস্তার করে ইসলামের রাজনীতি, এভাবেই নারীবিদ্বেষী সর্বগ্রাসী থাবায় আক্রান্ত হয় সব শ্রেণীর, সব ধর্মের , সব সংস্কৃতির নারী। জুলাই-আগস্টে ইসলামী বিপ্লব ঘটেছিল দেশে। এর ফল এখনই দেখতে পাচ্ছি। জিহাদিদের আস্ফালন বন্ধ না করা হলে নারীর জন্য দেশটি বাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে, দেশটি পরিণত হবে শ্বাসরুদ্ধকর এক জ্বলন্ত নরকে।'