কলকাতা: প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী বাপি লাহিড়ীর স্মৃতিচারণায় সঙ্গীত পরিচালক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ''মানুষটা মনে প্রাণে বাঙালি। অনেক বড় ব্যক্তিত্ব ছিলেন সঙ্গীত জগতে। যতই উনি মুম্বইতে থাকেন। ডিস্কো সিঙ্গার বলা হয় তাঁকে। বাঙালিয়ানাটা কোনওদিন ভুলে যাননি। অসংখ্য সৃষ্টি রয়েছে তাঁর। আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। অনেক সময় আমাকে আমার গান শুনে বলতেন যে ওই গানের অন্তরা সুন্দর হয়েছে, ওই গানের মুখরা ভাল হয়েছে, কীভাবে বানালি? কাল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পর আজ বাপি দা। সত্যিই কিছু বলার নেই। সঙ্গীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি। কালকের থেকেই মনটা খারাপ। সকা১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্ম বাপি লাহিড়ির। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি দু জনেই ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী। গত একমাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাপি ছিলেন। সকালে এই খবরটা আরও খারাপ করে দিল মনটা।'' তিনি আরও বলেন, ''বাপিদা নিজের গানেই বলেছেন যে কভি আলবিনা না কেহনা, তাই আমিও বাপিদাকে আলবিদা বলতে পারব না।''


শুরু হয়েছিল ৩ বছর বয়স থেকেই। গান নয়, বরং তবলা বাজানো দিয়ে সঙ্গীতজগতে পথ চলা শুরু। ১৯৭৫ সালে হিন্দি ছবি জখমি দিয়ে কেরিয়ার শুরু। এরপর ১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাপি লাহিড়ি। একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন ভারতীয় সঙ্গীতের ডিস্কো কিং। ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘ডান্স ডান্স’, ‘হিম্মতওয়ালা’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কম্যান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি থ্রি’-র জন্য। বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ একাধিক ছবিতে সুর দিয়েছেন। গায়কীর নিজস্বতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।


সঙ্গীতের বাইরেও তিনি ছিলেন এক স্টাইল স্টেটমেন্ট। সোনার গয়না পরার ঝোঁক ছিল বাপি লাহিড়ির। অসম্ভব ভালবাসতেন সোনার গয়না নিয়ে চর্চা করতে। সেই থেকেই তাঁর স্টাইল এক আইকন হয়ে ওঠে। গানের পাশাপাশি রাজনীতিতেও উত্সাহী ছিলেন। ২০১৪-য় শ্রীরামপুর লোকসভায় বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। যদিও তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হন।