কলকাতা: রাতে শ্যুটিং থেকে বাড়িতে ফিরে আলোচনা হয়েছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ নিয়েই। বাড়িতে চলেছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গান। আজ সকালেই বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত বাপি লাহিড়ির প্রয়াণের (Bappi Lahiri) খবর। এবিপি আনন্দর অনুষ্ঠানে এসে বাপি লাহিড়ি ও সঙ্গীত জগতে তাঁর অবদান নিয়ে কথোপকথনে সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Surajit Chatterjee)। 


আজ এবিপি আনন্দর অনুষ্ঠানে সুরজিৎ বলছেন, 'বাপি লাহিড়ির অনুরাগীদের কোনও বয়স নেই। আমাদের আবাসনের গার্ড ও বাপি লাহিড়ির অনুরাগী। আজ সকাল থেকে শুনছি তাঁর ফোনে একের পর এক বাপি লাহিড়ির গান বাজছে। বেরনোর সময় দেখলাম ওর মুখও ভার। বাপিদা মানেই ক্ষমতা। বাপি লাহিড়ির পোশাক, গয়না সবকিছু নিয়ে বার বার সমালোচনা হয়েছে। সেটা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু সঙ্গীত জগতকে যা দিয়ে গিয়েছেন তা তুলনাহীন। সেটাই মূল কথা'


আরও পড়ুন: 'আপনি অনেকের নাচ করার কারণ ছিলেন', বাপি লাহিড়িকে বলিউডের শ্রদ্ধা


প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী-সুরকার বাপি লাহিড়ি। বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। গতকাল রাত পৌনে ১২টা নাগাদ জুহুর ক্রিটি কেয়ার হাসপাতালে জীবনাবসান। গত বছর এপ্রিলে করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপি লাহিড়ি। পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। গত একমাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাপি ছিলেন। সোমবার ছেড়ে দেওয়া হয়। গতকাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় মৃত্যু, জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ছেলে বাপ্পা আমেরিকা থেকে ফেরার পর, আগামীকাল মুম্বইয়ের পবনহংস শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। 


১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্ম বাপি লাহিড়ির। আসল নাম অলকেশ লাহিড়ি। কিন্তু পরিচিত হন বাপি লাহিড়ি নামে। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি দু’ জনেই ছিলেন গানের জগতের মানুষ। কিশোর কুমার সম্পর্কে বাপির মামা। ফলে ছোট থেকে সাঙ্গীতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন বাপি লাহিড়ি। 


শুরুটা ৩ বছর বয়সে তবলা বাজানো দিয়ে। ১৯৭৫ সালে হিন্দি ছবি জখমি দিয়ে কেরিয়ার শুরু। এরপর ১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাপি লাহিড়ি। একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন ভারতীয় সঙ্গীতের ডিস্কো কিং। ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘ডান্স ডান্স’, ‘হিম্মতওয়ালা’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কম্যান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি থ্রি’-র জন্য। বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ একাধিক ছবিতে সুর দিয়েছেন।
গায়কীর নিজস্বতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।