মুম্বই : বাপি লাহিড়ির স্মৃতিচারণায় রানি মুখোপাধ্যায় (Rani Mukherjee)। তুলে ধরলেন পারিবারিক সম্পর্কের কথা। এও জানালেন, কলকাতায় থাকাকালীন তাঁর মা ও বাপি লাহিড়ি (Bappi Lahiri) ছোটবেলার বন্ধু ছিলেন।


রানি বলেন, ফের এক মূল্যবান রত্নকে হারাল দেশ। ভারতীয় সিনেমায় আইকনিক সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব হয়ে থাকবেন বাপি আঙ্কেল। তাঁর সঙ্গীত ছিল অনবদ্য, সুরকার হিসাবে তাঁর বহুমুখিতা অতুলনীয়। সত্যিকারের স্ব-নির্মিত মানুষ। বাবা-মায়ের কাছে এক অসাধারণ ছেলে, চমৎকার স্বামী এবং এক দারুণ বাবা।


কলকাতায় রানি মুখোপাধ্যায়ের মা ও বাপি লাহিড়ি শৈশবের বন্ধু ছিলেন। সেই কথা তুলে ধরে রানি বললেন, আমাদের পরিবারের কাছে এটা একটা ব্যক্তিগত ক্ষতি। আমার মা ভেঙে পড়েছে। যখন গোটা বিশ্ব তাঁর জন্য শোকপ্রকাশ করছে, তখন শৈশব থেকে তৈরি হওয়া তাঁর সঙ্গে নানা স্মৃতি আমার মনে ভিড় করছে। খুবই মিস করব ওঁকে। ওঁর হাসিমুখ ও দয়ালু ব্যক্তিত্ব সবসময় সুখের স্মৃতি।  


প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী-সুরকার বাপি লাহিড়ি। বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। গতকাল রাত পৌনে ১২টা নাগাদ জুহুর ক্রিটি কেয়ার হাসপাতালে জীবনাবসান হয় তাঁর। গত বছর এপ্রিলে করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপি লাহিড়ি। পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। গত একমাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সোমবার ছেড়ে দেওয়া হয়। গতকাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ছেলে বাপ্পা আমেরিকা থেকে ফেরার পর, আগামীকাল মুম্বইয়ের পবনহংস শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। 


১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্ম বাপি লাহিড়ির। আসল নাম অলকেশ লাহিড়ি। কিন্তু পরিচিত হন বাপি লাহিড়ি নামে। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি দু’ জনেই ছিলেন গানের জগতের মানুষ। কিশোর কুমার সম্পর্কে বাপির মামা। ফলে ছোট থেকে সাঙ্গীতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন বাপি লাহিড়ি। 


শুরুটা ৩ বছর বয়সে তবলা বাজানো দিয়ে। ১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাপি লাহিড়ি। একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন ভারতীয় সঙ্গীতের ডিস্কো কিং। ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘ডান্স ডান্স’, ‘হিম্মতওয়ালা’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কম্যান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি থ্রি’-র জন্য। বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ একাধিক ছবিতে সুর দিয়েছেন।
গায়কীর নিজস্বতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।


সোনার গয়না পরার ঝোঁক ছিল বাপি লাহিড়ির। গানের পাশাপাশি রাজনীতিতেও উত্সাহী ছিলেন। ২০১৪-য় শ্রীরামপুর লোকসভায় বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হেরে যান।