কলকাতা: চলে গেলেন বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল। ভোররাতে মুম্বইয়ের বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। মুম্বইয়ে মেয়ের কাছে গিয়েছিলেন তাপস। কলকাতায় ফেরার সময় বুকে যন্ত্রণা অনুভব করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জুহুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন ভোর চারটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
বাংলা ছবিতে চিরদিনই পাশের বাড়ির নিরীহ শান্ত ছেলে বলে পরিচিত ছিলেন তাপস। আসলে এ ধরনের চরিত্রের মাধ্যেমেই বাংলা চলচ্চিত্র জগতে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। 'দাদার কীর্তি'-র সেই সরল সাদাসিধে ছেলের চরিত্রে তাপসের অভিনয় আজও দর্শকদের স্মৃতিতে অম্লান। 'সাহেব' সিনেমায় যৌথ পরিবারের কর্মসংস্থানহীন অবহেলার শিকার ছোট ছেলের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বোনের বিয়ের জন্য অর্থ যোগাড় করে বৃদ্ধ বাবার পাশে দাঁড়ানোর কাহিনী আজও বাঙালি দর্শকদের চোখে জল এনে দেয়। পাশের বাড়ির ছেলের ইমেজ নিয়ে বাংলা সিনেমায় নিজের স্বতন্ত্র পরিচিত গড়ে তোলেন তাপস।
তবে সেই পরিচিতির মধ্যেই নিজেকে বেঁধে রাখেননি তাপস। সেই ইমেজ ভেঙে বেরিয়েও সাফল্য পেয়েছেন তিনি। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মতো পরিচালকের 'উত্তরা' ও 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান' সিনেমায় তাঁর অভিনয় দেখেছেন দর্শকরা।


তপন সিংহর 'বৈদুর্য রহস্য'-র মতো থ্রিলারেও তাপসের অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছিল।

১৯৮০-তে তরুণ মজুমদারের 'দাদার কীর্তি' দিয়ে কেরিয়ার শুরু তাপসের।
দেখে নেওয়া যাক তাপসের উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমা।
১৯৮০-তে তরুণ মজুমদারের সিনেমা 'দাদার কীর্তি'-র মাধ্যমে বাংলা সিনেমায় আত্মপ্রকাশ তাপসের। এই সিনেমায় তাপসের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন মহুয়া রায়চৌধুরী, সন্ধ্যা রায়, দেবশ্রী রায়, অনুপ কুমারের মতো শিল্পী।বাংলা সিনেমায় চিরদিনই পাশের পাড়ের নিরীহ শান্ত ছেলে বলে পরিচিত ছিলেন তাপস। আসলে এ ধরনের চরিত্রের মাধ্যেমেই বাংলা সিনেমা জগতে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। বাংলা সিনেমায় 'দাদার কীর্তি'-র সেই সরল সাদাসিধে ছেলের চরিত্রে তাপসের অভিনয় আজও দর্শকদের স্মৃতিতে অম্লান।

১৯৮১-তে বিজয় বসুর ‘সাহেব’। এই সিনেমায় তাপস পালের সঙ্গে দেখা গিয়েছে উত্পল দত্ত, মহুয়া রায়চৌধুরী, মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীদের।
সহজ-সরল  চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যেমেই বাংলা সিনেমা জগতে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। বাংলা সিনেমায় 'দাদার কীর্তি'-র সেই সরল সাদাসিধে ছেলের চরিত্রে তাপসের অভিনয় আজও দর্শকদের স্মৃতিতে অম্লান।

১৯৮৫-তে তপন সিনহার 'বৈদূর্য রহস্য'। এই সিনেমায় তাপস পালের সঙ্গে অভিনয় করেন মুনমুন সেন।
১৯৮৬-তে তরুণ মজুমদারের ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’। এই সিনেমায় তাপসের বিপরীতে ছিলেন দেবশ্রী।

১৯৮৬-তে জওহর বিশ্বাসের ‘অনুরাগের ছোঁয়া’। এই সিনেমায় দ্বৈত ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাপসকে। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন মহুয়া রায়চৌধুরী।

১৯৮৪-তে দীপরঞ্জন বসুর ‘পারাবত প্রিয়া’। এই সিনেমায় তাপসের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন মহুয়া রায়চৌধুরী ও দেবশ্রী রায়।

১৯৮৮-তে তরুণ মজুমদারের ‘আগমন’। এই সিনেমায় তাপসের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন সন্ধ্যা রায়, দেবশ্রী রায়।

১৯৮৭-তে অঞ্জন চৌধুরীর ‘গুরুদক্ষিণা’। এই সিনেমায় তাপসের সঙ্গে অভিনয় করেন শতাব্দী রায়, রঞ্জিত মল্লিক।

১৯৯০-এ তরুণ মজুমদারের 'আপন আমার আপন'। এই সিনেমায় তাপস পালের সঙ্গে অভিনয় করেন শতাব্দী রায়।

২০০০-এ বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের 'উত্তরা'।
২০০২-এ বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের 'মন্দমেয়ের উপাখ্যান'।