কলকাতা:  বাঙালি মানেই যেন চাকরি, মধ্যবিত্ত মানসিকতা, মেনে নেওয়া.. মানিয়ে নেওয়া। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেন বদল এসেছে সেই চিন্তাধারায়। কলকাতার অলিতে গলিতে এখন বিভিন্ন ক্যাফে, রেস্তোরাঁ... আর তাঁর বেশিরভাগেরই পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন এক একজন নারী। সেই গল্পকেই যেন রুপোলি পর্দায় তুলে ধরেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee)। পুজোয় তাঁর পরিচালনায় মুক্তি পাবে বৌদি ক্যান্টিন (Boudi Canteen)। 


রান্নাকে কেন্দ্র করেই এক নারীর নিজেকে খুঁজে পাওয়ার গল্প বৌদি ক্যান্টিন। পরমব্রত বলছেন, 'বৌদি ক্যান্টিনের মতো গল্প আমরা আমাদের আশেপাশে তাকালেই দেখতে পাই। আগে মা-মাসিরা শাড়ির ব্যবসা করতেন। আধুনিক বাঙালি ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে। খাবারকেও পেশা হিসেবে নিচ্ছে অনেকেই। কলকাতায় এখন কত ক্যাফে, ছোট ছোট দোকান। তার অধিকাংশের দায়িত্ব রয়েছে একজন মেয়ের কাঁধেই। আমরা বলি, বানিজ্যে বসতে লক্ষ্মী। কিন্তু উল্টোদিক থেকে দেখতে গেলে, লক্ষ্মীতেই বাণিজ্য বসত করে।'


আরও পড়ুন: Anupam Roy: অঙ্গনার প্রেমে হাবুডুবু ঋতব্রত, সুরে গল্প বাঁধলেন অনুপম


'বৌদি ক্যান্টিন' ছবি যে পরিবারের গল্প বলেছে, সেই পরিবার গোঁড়া নয়। পরমব্রত বলছেন, 'নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে একটা অদ্ভুত ধারণা আছে। সমাজ মনে করে, পুরুষেরা যে কাজগুলো করেন, একমাত্র সেই কাজগুলো করলেই বোধহয় নারীর ক্ষমতায়ন হয়। বাঙালিদের পরিবারের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ এখন চাকরি করার বিরোধী নয়। কিন্তু কিছু কাজের সঙ্গে কিছু ধারণা জড়িয়ে রয়েছে। কিছু কাজ যেমন ছেলে, মেয়ে হিসেবে ভাগ করে দেওয়া হয়। যেমন বাড়িতে রোজকার রান্না হোক বা অনুষ্ঠানে, রান্নার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মেয়েরাই। অথচ সেই রান্নাকে ভালোবেসে কেউ যদি সেটাকে পেশা হিসেবে নিতে চান, তাহলেই সমস্যা। কিন্তু আমরা যখন বাইরে যাই, রেস্তোরাঁয় খেতে যাই, তখন দেখি বেশিরভাগ সেফই পুরুষ। কাজের সঙ্গে লিঙ্গবৈষম্যের এই বিভেদকেই তুলে ধরবে বৌদি ক্যান্টিন।'


এখন বাংলায় গোয়েন্দা থেকে থ্রিলারের ছড়াছড়ি। বাঙালি কি পারিবারিক গল্প দেখার উৎসাহ হারাচ্ছে? পরমব্রত বলছেন, 'যে কোনও বিভাগের গল্পেই যদি ভালো বিষয়বস্তু তুলে ধরা চায়, দর্শক তা দেখতে পছন্দ করবেন। যদি গোয়েন্দা বা রহস্য গল্পে মাপকাঠিগুলো পূরণ করা যায়, মানুষ সেটা দেখতে ভালোবাসবেন। একই গল্প পারিবারিক ছবির ক্ষেত্রেও। 'বৌদি ক্যান্টিন' এমনই একটা পারিবারিক গল্প।'