মুক্তি পেয়েছে রুক্মিণী মৈত্র , আবীর চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ছবি 'সুইৎজারল্যান্ড' এর ট্রেলার। ছবির গান সুপার-ডুপার হিট। এই প্রথম শাড়ি পরে নাচলেন রুক্মিণী। আবীরকেও এই প্রথম নাচতে দেখা গেল। ছবি নিয়ে এবিপি আনন্দের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় নায়িকা।

  • দেব নয়, নায়ক অন্য কেউ!  আবীরের সঙ্গে 'সুইৎজারল্যান্ড'। কেমন লাগল?
    আসলে সবাই বিষয়টাকে অন্যভাবে দেখছে। আমার দেবের সঙ্গে কাজ করতে করতে একটা কমফর্ট জোন হয়ে গিয়েছিল ঠিকই। তাবলে অন্য কারও সঙ্গে কাজ করব না, এমন বিষয় কিন্তু কোনওদিনই ছিল না। দেবের সঙ্গে কাজ করার সময়ও যে অনুভূতিটা হয়েছিল, একজন মেগাস্টারের সঙ্গে কাজ করতে যে নার্ভাসনেস-টা আসে আর কী! আবীরও তো তাই। ওর এত ফ্যান, অসাধারণ অভিনেতা। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে টেনশনটা কেটে গেল। খুব-খুব হেল্পফুল আবীর। আমার মনোভাব বুঝে কাজটা সহজ করে দিয়েছিল আবীর।


 

 

  • রুক্মিণী নাকি দেব ছাড়া কারও প্রোডাকশনে কাজ করবেন না, এমন কথাও তো রটেছিল। তাহলে সিদ্ধান্ত বদল?
    না। না। আমার তো এমন ভাবনাই কোনওদিন ছিল না। এটা এক্কেবারেই রটনা। আমার 'কিডন্যাপ' ছবিটাও তো সুরিন্দর ফিল্মসের। আসলে জিতদার প্রোডাকশন হাউস থেকে আগেও প্রস্তাব এসেছিল ছবি করার। শুধুমাত্র সময় ছিল না বলেই, ছবিগুলো করা হয়নি। আর কোনও কারণ নেই। এবার সেই সুযোগটা হয়ে গেল। চরিত্রটাও এক্কেবারে নতুন। বলতে পারো, রুক্মিণীর মৈত্রর নতুন করে ডেবিউ হল।


 

  • তোমার চরিত্র রুমি তো একেবারে মধ্যবিত্ত গৃহবধূ। যার কাছে সুইৎজারল্যান্ড একটা স্বপ্ন। তোমার বাস্তব জীবনের সঙ্গে তো কোনও মিলই নেই!
    সেটা তো একদম ঠিকই। আমি একেবারে অন্যভাবে মানুষ। মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু। এভাবে শাড়ি পরে থাকিনি। ভাবিওনি রুমি অর্থাৎ এই ছবিতে আমার চরিত্রের মতো করে।  এই ছবিতে আবীরের চরিত্র শিবাশিস, পেশায় সেলস পার্সন। স্ত্রী রুমি স্কুলে পড়ায়। দুই মেয়ে নিয়ে হাসিখুশি পরিবার। তাদের কাছে বেড়ানো একটা স্বপ্ন। দিঘা-পুরী-দার্জিলিং পেরিয়ে সুইৎজারল্যান্ড সেখানে দূরের স্বপ্ন! এহেন রুমির চরিত্রে অভিনয় করাটা আজ পর্যন্ত আমার কাছে সব থেকে চ্যালেঞ্জিং। আমি আমার মাসি-মা, বান্ধবী, কত জনের সঙ্গে কথা বলেছি। যাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে রুমির মিল আছে। আমার ভাইঝি আমায়রাকে ছোট থেকে বড় করার অভিজ্ঞতাটা আমায় খুব সাহায্য করেছে। সোহিনী সেনগুপ্তর সঙ্গে ওয়ার্কশপ করেছি। যদিও শাড়ি দ্রুত পরে ফেলার অভ্যেস আমার মডেলিং করার সময় থেকেই। ৪০ সেকেন্ডে শাড়ি পরতে পারি।


  • দেব কী বলল? 
    দেব তো স্ক্রিপ্ট শুনেই বলেছিল, ছবিটা তোমায় করতেই হবে। আমিও অফার পেলে করতাম! আসলে এই ছবিটা সবার ছবি। আট থেকে আশি সবার ছবি। এক মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্ন সফল করার ছবি। আশা-আকাঙ্ক্ষার ছবি। যাদের কাছে সুইৎজারল্যান্ড যাওয়া অনেক বড় স্বপ্ন।


  • দেবের বান্ধবী, এটা কি কোনও দিন ব্যাগেজ হয়ে গিয়েছে?
    না। আমি ছবি করতে তো চাইনি কোনও দিন। বরং দেব বলেছিল অভিনয়ে আসতে। আমি বারবার না বলে গিয়েছি। এই নিয়ে ৬ মাস দেবের সঙ্গে আমার ঝগড়া চলেছিল। তারপর তো ছবি করতে রাজি হই। কিন্তু কেউ কেউ বলল, দেবের বান্ধবী বলেই নাকি ছবি পেয়েছি। কিন্তু বলুন তো ২ বছরের মধ্য়ে ৫ টি ভিন্ন ধারার ছবি। তাও যদি মানুষ না বোঝে! যাই হোক এটা বোধ হয় মেয়েদের ক্রেডিট না দেওয়ার চিরকালীন অভ্যেস! আমাকে দেবের বান্ধবী হিসেবে কাজ দেওয়া হয়নি, কাজ পেয়েছি নিজের ক্যারিশ্মায়, বারবার এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। যাতে কেউ না বলে, দেবের সৌজন্যে কাজ পেয়েছি। সেদিক থেকে দেখতে হলে দেবকেও বোধ হয় এত চাপ নিতে হয়নি।



 




  • মেয়েদের জায়গাটা তাহলে সমাজে এখনও একই রয়ে গেল?
    এখন মেয়েরা ঘরে বাইরে বাইরে অদ্বিতীয়া। তাই মেয়েদেরও যেমন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পেতে হবে, তেমনই ছেলেদেরও ঘরের কাজ শিখতে হবে। মেয়েদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। ছেলেদের কাছে লড়াই নয়, পাশাপাশি পা মিলিয়ে এগোতে হবে। সেটাই নারীবাদের মূল কথা হওয়া উচিত।


  • দেশে তো এত নারী নির্যাতন...
    দিকে দিকে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে। যৌনতা শিক্ষা আর ধর্ম শিক্ষা দুটোই এখন স্কুল-কলেজে বড় প্রয়োজন। কারণ দুটো নিয়েই প্রভূত ভুল ধারণা। ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দিলে ধর্ষণ আটকানো যাবে না। বরং লিঙ্গচ্ছেদ করা হোক। যাতে শাস্তিটা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। মানুষ ধর্ষণ করার কথা ভাবতে যাতে ভয় পায়। সেটা যদি কেউ মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে, তবে একটা মেয়ের যৌনাঙ্গ দিয়ে রড ঢুকিয়ে দেওয়া,  জিভ কেটে দেওয়া মানবাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া নয় কি?


  • পুজো কেমন কাটছে? দুবাইয়ে ছুটি কাটানো হল?
    ছুটি কাটাতে যাইনি। আমি আর দেব একটা কাজে গিয়েছিলাম। আর আমি তো এখন ৭ দিনের কোয়ারেন্টিনে। তাই বেরচ্ছি না। একেবারেই।