কলকাতা: সোমবার 'রাত দখল'-এর ডাকে সাড়া দিয়েছে শহর থেকে শহরতলি। আলো নিভিয়ে, হাতে মোমবাতি নিয়ে রাত দখল-এ সামিল হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু তার মধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল ক্যানিংয়ের বিধায়কের বলা কথা। ক্যানিং পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ত পরেশরাম দাস, শাসকদলের তো বটেই, সাধারণ মানুষদেরও রাত দখল-এ যেতে বারণ করেছিলেন। বলেছিলেন এটা ভুয়ো। আর সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এবার মুখ খুললেন দেব (Dev)। কী বললেন তিনি? 


দেবের কথায়, 'আমাদের নির্বাচনী এলাকা আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার সুযোগ দেয়, সেটা দিনে হোক বা রাতে। এতে কোনও অন্যায় নেই। এই আন্দোলনে আমারও সমর্থন, শুভেচ্ছা রইল। চিকিৎসক হোক বা সাধারণ মানুষ.. যে আন্দোলন আবেগ থেকে আসছে সেই আন্দোলনকে আমি সাধুবাদ জানাই এবং তাকে সমর্থন করি। এখানে আমার রাজনৈতিক দলের কে কী বলল, কে কী বলল না সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার মনে হয় যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের কাছেও কে কী বলল এটা গুরুত্ব পাওয়া উচিত নয়। আমরা সবাই তাকিয়ে রয়েছি সুপ্রিম কোর্টের দিকে। যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাঁদের শাস্তি হোক, যে অপরাধ করেছে তার ফাঁসি হোক এটাই বাংলার প্রত্যেকটা মানুষ চাইছে।'


কাঞ্চন মল্লিকের বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে দেব বলেন, 'কাঞ্চন মল্লিক যেটা বলেছেন সেটা দুঃখজনক। কল্যাণদা যে কাঞ্চন মল্লিককে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছিলেন, আমি সেটাকে সমর্থন করিনি। আমিই তাঁকে আমার প্রচারে ডেকে নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কাঞ্চন মল্লিক আর এই কাঞ্চন মল্লিকের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে। যে কাঞ্চন মল্লিক এই বিবৃতি দিয়েছেন, তাঁকে আমি চিনি না। কিন্তু উনি যেহেতু আমার সহকর্মী এবং আমার দলেরই একজন, আমিই তাঁর হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমার মনে হয়, আমাদের আরও বেশি দায়িত্ববান হওয়া উচিত। আমি, আমার পরিবার চাই সবাই ন্যায় পাক। আজকে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী বা 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' অর্থহীন হয়ে যাবে যদি এমন ঘটনা প্রত্যেকদিন ঘটে। এখনই কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা উচিত আর ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করা উচিত। ধর্ষকেরা আতঙ্কবাদীদের থেকেও ভয়ঙ্কর। কারণ আমরা তো আতঙ্কবাদীদের চিনতে পারছি। কিন্তু ধর্ষকদের আমরা চিনতে পারি না। তারা আমজনতার মধ্যে থাকে কারণ তাদের মনে কোনও ভয় নেই। তারা জানে এই রাজনৈতিক লড়াইয়ের মধ্যে তারা বেঁচে যাবে। মানুষকে ভয় পেতে হবে। আমায় আমার এক বন্ধু বলেছিল, তুই সাংসদ তুই কিছু কর। কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি, সাধারণ মানুষ যেভাবে জেগেছে, তাঁরাই এই পরিবর্তন আনতে পারবে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিল না আসলে, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী বা 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' অর্থহীন। সব দলকে বলব নিজেদের মধ্যে কেচ্ছা না করে দল ছাড়া, পতাকা ছাড়া সাধারণ মানুষকে সমর্থন করুন। এমন বিল আনুন, শাস্তি আনুন যেটা ভয়াল হবে।  তবে আমরা আগেও দেখেছি, ভুল বিচার হয়েছে। কোনও নির্দোষ যেন শাস্তি না পান। তবে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতেই হবে। নাহলে মানুষ ভয় পাবে না।'


আরও পড়ুন: Mir on RG Kar Issue: করোনাকালে মনে হয়েছিল চিকিৎসকেরা ভগবান, আজ তাঁদেরই রাস্তায় নেমে লড়তে হচ্ছে: মীর


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।