কলকাতা: ওরা দেবতা কিন্তু দেবতা নয়, পশু কিন্তু পশু নয়। ইচ্ছা হলে রূপ বদলে ফেলতে পারে ওরা। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই রূপবদল হয়ে ওঠে জীবিকা। ওরা বহুরুপী, রূপ বদলায় পেশার তাগিদে। কিন্তু ইঁদুরদৌড়ের এই শহরে কেমন আছে তাঁরা? চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগামী তথ্যচিত্র ‘ডাইং আর্ট অব দ্য বহুরূপীজ অব বেঙ্গল’ ('Dying Art of the Bohurupis of Bengal')-এ মিলবে তারই খোঁজ। হারিয়ে যাওয়া বাংলার এই শিল্পই উঠে আসবে টিভির পর্দায়। পরিচালকের চোখে পর্দায় ফুটে উঠবে বিপন্ন এই শিল্পীদের অস্তিত্বরক্ষার লড়াইয়ের গল্প। 


লকডাউনের ফলে কমবেশি ক্ষতির মুখ দেখেছেন সমস্ত শিল্প ও শিল্পীরা। কিন্তু বহুরূপীরা? এই শিল্পীরা কেমন আছেন সম্ভবত জানেন না কেউই। পরিচালক জানাচ্ছেন, লকডাউনের ফলে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তারা, সেই পরিস্থিতিও তুলে ধরা হবে পর্দায়।  বহুরূপী শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতির কথা নিজের মুখেই বলেছেন কিংবদন্তি বহুরূপী শিল্পী সুবলদাস বৈরাগ্য, রবি পণ্ডিত, বীরভূমের ব্যাধ পরিবারের রাজেন্দ্র ব্যাধ সহ বাজিকর সম্প্রদায়ের বহুরূপী ভানু বাজিকর ও অন্যান্যরা। 


এর আগে পরিচালত রাজাদিত্য ‘ডেথ সার্টিফিকেট‘ নামে একটি ছবি তৈরি করেছিলেন। দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছিল এই চলচ্চিত্র। 'ডেথ সার্টিফিকেট'-এর পরে তিনি ‘শিবরাত্রি’ ও ‘শববাহিকা’ নামে আরও দু'টি ছবি তৈরি করেছিলেন। এই ছবিটি পরিচালক রাজাদিত্য উৎসর্গ করেছেন তাঁর বাবা সাহিত্যিক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দাদা চলচ্চিত্র নির্মাতা বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়কে।


ছবির বিষয়ে বলতে গিয়ে পরিচালক রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যা জানান, 'এই তথ্যচিত্র গবেষণাধর্মী ও মৌলিক। এটি সমাজের এক শ্রেণীর অবহেলিত ও প্রান্তিক শিল্পীদের কথা তুলে ধরবে। একই সঙ্গে একটি সুপ্রাচীন শিল্পের খারাপ পরিস্থিতি অবস্থা এবং তাকে রক্ষার প্রয়োজনীয়তার প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।। ছবির সিনেমাটোগ্রাফার তন্ময় কর্মকার, নয়ন তালুকদার, গিরিধারী গড়াই এবং ছবি সম্পাদক ও রঙ বিন্যাসক সুমন্ত সরকারের অসাধারণ মুন্সিয়ানায় ছবিটি এক অন্য মাত্রা পেয়েছে।। আশা করি দর্শকদের এই ছবি ভালো লাগবে।'