কলকাতা: এই ছবি তাঁর স্বপ্নের। তিল তিল করে গড়ে তোলা। আর সেই ছবিতেই এমন একজনের গান রয়েছে, যাঁর গান বদলে দিয়েছিল এই পরিচালকের জীবন। তাঁকে বলা হয় টলিউডের 'ফার্স্ট বয়'। আর তাঁর ছবি 'পদাতিক'-এ ১০ বছর পরে গান গাইছেন, কবীর সুমন (Kabir Suman)। সেই সঙ্গীতশিল্পীকে নিয়ে কতই না আবেগ রয়েছে পরিচালকের। আজ মুক্তি পাওয়া '‘জনতার হাতে হাতে ঘোরো তুমি নিশানের মতো’'-র পরে এবিপি লাইভকে (ABP Live) কবীর সুমনকে নিয়ে তাঁর মনের কথা, অনুভূতি বললেন, সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherjee)। 


লকডাউনের সময় থেকে এই ছবির কাজ শুরু করেছিলেন সৃজিত। একে একে লুক, গান যখন প্রকাশ হচ্ছে, সেই স্বপ্নপূরণের রাস্তায় হাঁটতে কেমন লাগছে সৃজিতের? পরিচালক বলছেন, 'কত বছর ধরে এই ছবিটা আমার স্বপ্ন। এক এক করে মানুষ আমার স্বপ্নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, সমৃদ্ধ করছেন। আর সেখানেই ঝলমল করছে কবীর সুমনের নাম। সুমনদার এই গানটা কোনও অ্যালবামে রেকর্ড হয়নি। কিন্তু লাইভ অনুষ্ঠানে তিনি বহুবার এই গানটি গেয়েছেন। নাটকে ব্যবহৃত হয়েছে। ঘরোয়া আড্ডাতেও এই গান শোনা যায়। গানটা আমার মাথায় ছিল। পুরো চিত্রনাট্য লেখা শেষ করার পরে আমি দেখলাম, অদ্ভূতভাবে এই গানটা মৃণাল সেনের জীবনের সঙ্গে খাপ খেয়ে গিয়েছে। গানটা যেন মৃণাল সেনের জীবনের একটা সারাংশ। এই ভাবনা থেকেই গানটা ব্যবহার করেছিলাম।'


এক দশক পরে সৃজিতের ছবিতে ব্যবহৃত হবে কবীর সুমনের গান। সৃজিত বলছেন, 'সুমনদা তো একটা যুগ, একটা অধ্যায়। বাংলা গানে একটা আন্দোলন। সুমনদা আমার ছবিতে গান গাইছেন এটা একদিকে যেমন একটা বিশাল প্রাপ্তি, তেমনই ভাললাগা, ভালবাসার জায়গা তো রয়েছেই। আমার জীবনে সুমনদার গানের একটা বিশাল পরিসর রয়েছে। সেই জায়গা থেকে এটা আমার কাছে ভীষণ আবেগের। ১৯৯২ সালে আমায় অনুপ্রাণিত করেছিল সুমনদার গান। অনেকে আমায় প্রশ্ন করেন, চাকরি ছেড়ে সিনেমা করতে আসার সাহস কিভাবে হয়েছিল? এই সাহস যারা যুগিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম সুমনদার 'তোমাকে চাই' অ্যালবামটা। 'তোমাকে চাই' অনেকগুলো জীবন বদলে দিয়েছিল আর তার মধ্যে একটা তো অবশ্যই আমার। সেই জায়গা থেকে এটা একটা বিশাল ব্যাপার'। 


'জাতিস্মর'-এর গানের স্মৃতি রোমন্থন করে সৃজিত বলেন, 'জাতিস্মরের গান নিয়ে কী হয়েছিল, সবাই জানেন। সর্বকালের সেরা অ্যালবামগুলির মধ্যে অন্যতম 'জাতিস্মর'। অনেক জায়গা থেকে সেরা অ্যালবাম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সেটা সম্ভব হয়েছিল সুমনদার জন্যই।'


এই ছবিতে একটা সময়কালকে তুলে ধরতে গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়কেও গল্পে রাখতে হয়েছে। সেই কাজ করতে গিয়ে কখনও কোনও পিছুটান এসেছে সৃজিতের? পরিচালক বলছেন, 'একেবারেই নয়। আমাদের মৃণাল সেনের আশি বছরের বেশি জীবনকালকে তুলে ধরতে হয়েছে। কিন্তু কলকাতার এটাই মজা। কলকাতার এক পা ভবিষ্যতে, এক পা অতীতে। স্মৃতি এখানে খুব সহজলভ্য। সেগুলো রিক্রিয়েট করতে কোনও অসুবিধা হয়নি। ৮১ বছরের ব্যাপ্তিতে ঘটে যাচ্ছে মন্নোন্তর, বিশ্বযুদ্ধ, নকশালবাড়ি, বামপন্থার উত্থান, সিনেমার বিপ্লব, বার্লিন বল ভেঙে পড়া, কমিউনিজ়মের পতন, বিশ্বায়ন.. সব কিছু কভার হচ্ছে তাঁর একটা জীবনে। এটা খুব বড় ব্যাপার ছিল।'


 


আরও পড়ুন: Rituparna Sengupta: 'সমস্যা হয়েছে, তার মানে এটা নয় যে যার জেদে অনড় থাকবে' বলছেন ঋতুপর্ণা


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।