কলকাতা: বছর দুয়েক হল, মেয়ে থাকছে লন্ডনে। কলকাতায় থাকলে, মায়ের মন তাই পড়ে থাকে মেয়ের কাছেই। এখনও মেয়ের রুটিন অনুযায়ী ঘুম ভেঙে যায় সকালে। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃদিবস। সকালবেলা তাই বিশেষ এক কেক হাজির ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের (Dona Ganguly) বাড়িতে। পাঠালেন, মেয়ে সানা (Sana)। লন্ডন থেকে। বছর বাইশের সানা পড়াশোনা থেকে সাময়িক বিরতি নিয়ে এখন লন্ডনে কর্মরত। বিশেষ দিনে, নিজের মায়ের দিনটা আরও একটু বিশেষ করে তুলতেই এই উদ্যোগ সানার।
মা-মেয়ে চিরকালই অনেকটা বন্ধুর মতোই। ছোটবেলায় সানাকে নিয়েই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) সঙ্গে ট্যুরে যেতেন ডোনা। মহারাজ যখন ব্যস্ত থাকতেন ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ে, তখন সানাকে সামলানো, তাঁর মন ভাল করার দায়িত্ব একাই নিতে হত ডোনাকে। ছোটবেলা থেকেই মায়ের সঙ্গে তাই সম্পর্কের সমীকরণ বেশ বন্ধুত্বপূর্ণই ছিল সানার। এবিপি লাইভকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডোনা বলেছিলেন, 'মহারাজের সঙ্গে ট্যুরে প্রথম প্রথম যখন সানাকে নিয়ে যাওয়া শুরু করলাম, ও সারা রাত জেগে থাকত। ভোরের দিকে ঘুমাত। অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেই সময়ে আইপিএলের মতো দিল্লি বা ব্যাঙ্গালোরে ট্যুর হত না। অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, নিউজ়িল্যান্ড, লন্ডনে ট্যুর হত। মনে আছে, অ্যাডিলেডে মাঠের উল্টো দিলেই ছিল চিড়িয়াখানা। সেখানে ছোট্ট সানাকে একদিন নিয়ে গিয়েছিলাম। ছোটবেলায় সানাকে নিয়ে দেশের বাইরে যাওয়া মানেই ছিল চিড়িয়াখানা ট্যুর। মহারাজই সানাকে নিয়ে যেতে বলত, অন্যান্য ক্রিকেটারদের পরিবারও যেত। সেই সময় তো মহারাজ ইন্ডিয়া খেলছে। আমারও মনে হত, যদি সানাকে নিয়ে না যাই, ও জানবেই না বাবা মানুষটা কেমন? মনখারাপ হত মহারাজেরও। এরপরে আস্তে আস্তে সানার স্কুল শুরু হয়। তখন আবার অন্য রুটিন।'
আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি আপলোড করেছেন ডোনা। একটি চকোলেট কেকের ওপরে লেখা, 'হ্যাপি মাদার্স ডে'। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি শেয়ার করে নিয়ে ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, 'থ্যাঙ্ক ইউ সানা'। সময় পেরিয়েছে, বদলে গিয়েছে সানার রুটিনও। কিন্তু এখনও যেন সেটা মানতেই পারেন না ডোনা। বলছেন, 'সানা এখন বাইরে থাকে, ওর দায়িত্ব আর সেভাবে নিতে হয় না। কিন্তু সানার স্কুল, কলেজের প্রথম বছর, সবটাই তো কলকাতায় থেকে। এত বছর সানার স্কুলের সময় মতো সকালে ঘুম ভাঙত। ওকে রেডি করা, স্কুলে দিয়ে আসা..। সানা টেনিস খেলত একসময়, স্যুইমিং করত, গানও শিখেছিল কয়েক বছর। ওর টিউশন, ক্লাসের হিসেব মতোই আমি নাচের রিহার্সাল রাখতাম। এখনও আমার জীবনটা ওই রুটিনেই চলে। সদ্যই সানা আমায় বলছিল, ওকে কেন জোর করে টেনিস খেলালাম না। আসলে ও টেনিসটা ভাল খেলত। আবার কখনও সানা কপোট রাগ করে বলে, 'ছোটবেলায় তুমি আমার ওপর টর্চার করেছো'। কিন্তু সানার বন্ধুদের উপহার দেওয়ার দরকার হলে বা কেউ বাড়ি এলে, সেই আবদারও সানা আমার কাছেই করে।'
আরও পড়ুন: Nusrat Jahan on Mother's Day: প্রথমবার ছেলের ছবি প্রকাশ্যে আনলেন নুসরত, জানেন ঈশানের ডাকনাম কী?