কলকাতা: টালিগঞ্জ স্টুডিও পাড়ায় ফের অসন্তোষের মেঘ। প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার অভিযোগ ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের। সমস্যা সমাধান নিয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিটিতে প্রসেনজিৎ, দেব, গৌতম ঘোষ ও ২ মন্ত্রী ছিলেন। এখনও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি, দাবি ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের। ফেডারেশনে যুক্ত না থাকলে কাউকে কাজ করতে দেওয়া হয় না, এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন পরিচালকদের একাংশ। বাইরে থেকে কাউকে দিয়ে কাজ করানো যায় না, এই অভিযোগও উঠেছে। সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রী কমিটি গঠন করে দেওয়ার তিনমাস পরেও কোনও সুরাহা হয়নি। 


ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পরিচালক-অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের। আজ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, 'বাইরের কাউকে দিয়ে কাজ করাতে বাধা দিচ্ছে ফেডারেশন। ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত না হলে কাজ করতে দেওয়া হয় না। ইন্ডাস্ট্রির কোনও নিয়ম তৈরির আইনি অধিকার নেই ট্রেড ইউনিয়নের। ছোট ইউনিট নিয়ে কাজ করতে দেওয়া হয় না। প্রয়োজন ছাড়াই প্রচুর লোক নিয়ে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। প্রত্যেক ফরম্যাটের জন্য টেকনিশিয়ানদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ফেডারেশন। প্রয়োজন না থাকলেও জোর করে টেকনিশিয়ানদের কাজে নিতে হচ্ছে, ফেডারেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের। 



এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে পরমব্রত আরও বলেছেন, টলিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ায় এখন 'গুপি শুটিং' শব্দ বেশ প্রচলতি। এই শব্দের চল বিশ্বে কোথাও নেই। অথচ এখানে রয়েছে। একজন পরিচালক এবং প্রযোজক, নিজের পছন্দ মতো লোক নিয়ে কাজ করতে পারেন না। উল্টে ফেডারেশন যাঁদের বলবে, যতজন লোক বলবে ততজনকে নিয়ে কাজ করতে হবে। এই বিষয়টা বেআইনি। একজন পরিচালক এবং প্রযোজক নিজের পছন্দ মতো লোকজন নিয়ে শুটিং করবেন সেটাই স্বাভাবিক। 


এখানেই শেষ নয়। গিল্ডের এবং ফেডারেশনের সদস্য না হলে তাঁদের নিয়ে কাজ করতে বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন পরমব্রত। তিনি বলেছেন, গিল্ড কিংবা ফেডারেশনের সদস্য কেউ না হলে, তাঁকে নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে এক অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে। ফেডারেশনের বলে দেওয়া লোক সংখ্যার পরে আসে তাঁদের সুযোগ। অথচ এই সদস্য হওয়ার বিষয়টিও নির্ভর করে ফেডারেশনের নেতাবর্গের উপরেই। এমনকি রাজ্য সরকারের রূপকলা কেন্দ্র থেকে যাঁরা পড়াশোনা করে আসেন, তাঁদের সদস্যপদ দেওয়ার আগে পরীক্ষা নেয় ফেডারেশন, যা আক্ষরিক অর্থে একটি ট্রেড ইউনিয়ন। 


এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেই গত জুলাই মাসে কর্মবিরতিতে নেমেছিলেন পরিচালক এবং টেকনিশিয়ানদের একটা বড় অংশ। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে একটি কমিটি তৈরি করে রিপোর্ট গঠনের কথা হয়। কিন্তু তিনমাস পেরিয়ে গেলেও অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। কোনও রিপোর্টও জমা পড়েনি।