কলকাতা: করোনা-কালে বাতিল দুর্গাপুজোয় মুম্বই যাওয়ার পরিকল্পনা। প্রতিমা পুজোর বদলে এবছর নিয়মরক্ষা করতে ঘটপুজো হবে বাড়িতে। কিন্তু সেই নিয়ে মন খারাপের সময় নেই তাঁর। কারণ হাতে রয়েছে নানান ফুলে ভরা 'গুলদস্তা'। তিনি অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। নতুন ছবি মুক্তির আগে এবিপি আনন্দের সঙ্গে গল্পে মজলেন 'গুলদস্তা'-র শ্রীরূপা।

হাথরসকাণ্ড থেকে শুরু করে ঘরে, বাইরে একের পর নারী নির্যাতনের ঘটনা বার বার তুলে ধরছে সমাজে মেয়েদের অবস্থার কথা। সেই প্রেক্ষাপটে তিন নারীর জীবনের গল্প বলবে 'গুলদস্তা'। কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে নতুন এই ছবি? ‘প্রথমেই বলব, এই পরিস্থিতি নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে এই একই প্রেক্ষাপট রয়েছে,' বলছিলেন অর্পিতা। যোগ করলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে কোনও কথা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সিনেমা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা মাধ্যম। সেখানে যদি এমন কোনও ছবি দেখানো হয় যেখানে নারীদের সম্মান দেওয়ার বার্তা রয়েছে, তা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে মেয়েদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়ার শিক্ষা বাড়ি বা স্কুল থেকেই শুরু হওয়া উচিত। এখনও আমাদের কোনও স্কুলে সোশ্যাল সায়েন্স পড়ানো হয় না। এই শিক্ষাটা একেবারে গোড়া থেকে ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সবাইকেই দেওয়া উচিত।'

দেখুন সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার:

https://bengali.abplive.com/entertainment/abp-ananda-exclusive-arpita-chatterjees-unplugged-about-her-new-film-career-and-durga-puja-748820/amp

স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক থেকে শুরু করে সন্তান নিয়ে সমস্যা, ছবিতে বারবার ঝড় উঠেছে শ্রীরূপার জীবনে। দীর্ঘমেয়াদী মনখারাপ তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। অর্পিতার কথায়, 'আমাদের সমাজে খুব সাধারণ ইস্যু এগুলো। অনেক মেয়েকেই এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আর দিনের পর দিন অশান্তি সহ্য করতে করতে সেটা স্নায়ুর ওপর ভীষণ চাপ ফেলে।'
এই ছবিতে স্বস্তিকা মুখোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করেছেন অর্পিতা। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? অর্পিতা বলছেন, ‘স্বস্তিকাকে অনেকদিন ধরে চিনি। তবে এই প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ হল। ও কেবল পারদর্শী অভিনেত্রীই নয়, একজন ভীষণ ভালো মানুষও। নিজের শর্তে জীবনটাকে চালায়। আমি এটার খুব কদর করি।'

দেখুন সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার



সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের রোজনামচা ভাগ করে নেওয়া খুব একটা পছন্দ নয় অর্পিতার। লকডাউনে তাই অন্যান্য তারকাদের মত বাড়ির কাজ করার ছবি নেই তাঁর প্রোফাইলে। বলছেন, 'আমাদের জীবন নিয়ে সাধারণ মানুষের একটা উৎসাহ রয়েছে আর সেটাই স্বাভাবিক। তবে শিল্পী হলেও আমরা মানুষ। সেই জায়গা থেকে কিছুটা ব্যক্তিগত জীবন থাকা উচিত বলে আমার মনে হয়। আর বিয়ের পর ৬ বছর যখন কাজ ছেড়ে দিয়েছিলাম, তখন আমি একজন ফুলটাইম হোমমেকার ছিলাম। বাড়ির কাজ আমার কাছে তাই নতুন কিছু নয়। তবে লকডাউনে অনেকটা সময় পেয়েছিলাম বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকটা ফোকাস করেছি।'
দীর্ঘ অভিনয় জীবনে নিজেকে নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন অর্পিতা। সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র হিসাবে কোনটা বাছবেন? একটু ভেবে নিয়ে উত্তর দিলেন, 'অন্যতম পছন্দের কাজ অব্যক্ত। সেখানে প্রথমবার আমি একজন মধ্যবয়স্ক মহিলার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলাম। আর আগামী বছর মুক্তি পাবে হৃদপিণ্ড। সেখানেও আমার চরিত্রটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং। এছাড়া হিন্দি ছবি শব আর চিত্রকরও আমার খুব কাছের।'
আর স্বপ্নের চরিত্র? 'যে ছবির মধ্যে দিয়ে তুলে ধরা হবে মেয়েদের ক্ষমতায়ন। মেয়েরা সাধারণ নয়। তারা চাকুরীজীবী হোক বা গৃহবধূ, সব জায়গায়, সর্বত্র মেয়েদের স্বীকৃতি, সম্মান দেওয়া উচিত। এই বার্তা যে ছবি পৌঁছে দেবে দর্শকের কাছে, সেটা আমি করতে চাই।' স্বপ্নের চরিত্রের লম্বা তালিকা থেকে এই উত্তরটাই বেছে নিলেন অর্পিতা।