মুম্বই: লকডাউন পর্বে মহারাষ্ট্রে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে বাসে বাড়ি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়ে আমজনতার মনে জায়গা করে নিয়েছেন সোনু সুদ। অভিনয় তাঁকে যত না খ্যাতি এনে দিয়েছে, তার চেয়ে তিনি ঢের বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তাঁর এই মানবিক উদ্যোগের জন্য। এখন তাঁকেই মুসকিল আসান মনে করছেন তাঁর ভক্তরা। গতকাল যেমন একজন বলেছিলেন, ঘরে বসে আছি, মদের ঠেকে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন না! সোনুও রসবোধের পরিচয় দিয়ে পাল্টা ট্যুইট করেন, ভাই, আমি আপনাকে মদের দোকান থেকে ঘরে পৌঁছে দিতে পারি, সেটা চান তো, আমায় বলুন। মঙ্গলবার এক ভক্ত সোনুকে লেখেন, ভাইয়া, গার্লফ্রেন্ডের কাছে যেতে চাই। সে বিহারে আছে। কিছু করুন না! এবারও মজা করে সোনু জবাব দিয়েছেন, কয়েকটা দিন একটু দূরে থাকুন না, ভালবাসার অগ্নিপরীক্ষাও হয়ে যাবে!


করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে লকডাউন চালু হওয়ার পর প্রথমে সোনু নিজের মুম্বইয়ের হোটেল খুলে দেন ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিত্সায় যুক্ত ডাক্তার, নার্সদের বিশ্রামের জন্য। তবে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে যেভাবে এক বন্ধুকে নিয়ে তিনি ময়দানে নেমে পড়েন, তা বোধহয় অভাবনীয় ছিল। এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের ঘর থেকে অনেক দূরে আটকে পড়ে থাকা, দলে দলে ঘরের ফেরার জন্য হাঁটতে থাকার ছবি আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমার কাছে এটা প্রবল মানসিক যন্ত্রণার পর্ব। শেষ পরিযায়ী শ্রমিকটি পরিবার, প্রিয়জনেদের কাছে ফেরা পর্যন্ত ওদের পাশে থাকব। আমি সম্পূর্ণ আন্তরিকতা দিয়ে কাজটা করে যাব, আমার মনের গভীরে আছে বিষয়টা।
সোনুর এই দরদি মনের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, অভিনেতা অজয় দেবগণ। সোনু সম্প্রতি ট্যুইট করে এক পরিযায়ী শ্রমিকের কাছে তাঁর মোবাইল নম্বর চান যাতে তাঁকে বাড়়ি পাঠানোর বন্দোবস্ত করা যায়। সেই ট্যুইট ট্যাগ করে স্মৃতি লেখেন,দু দশকের বেশি পেশার দুনিয়ার সহযোগী হিসাবে তোমায় দেখার সৌভাগ্য হয়েছে, অভিনেতা হিসাবে সোনু সুদের উত্থানে আনন্দ পেয়েছি, কিন্তু এখন এই চ্যালেঞ্জের মধ্যে যে সহানুভূতি, দরদ তুমি দেখালে, তাতে তোমায় নিয়ে গর্ব আরও বেড়ে গেল, বিপন্ন মানুষজনকে সাহায্য করায় তোমায় ধন্যবাদ।
সোনুর পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর প্রয়াসের প্রশংসা করে অজয় লেখেন, তুমি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপদে তাদের ঘরে পাঠানোর যে উদ্যোগ নিয়েছ, যে মানবিক চেহারা দেখিয়েছে, তা দৃষ্টান্তমূলক। তুমি যেন আরও শক্তি পাও।