কলকাতা: মধ্যপ্রদেশের গড়কুণ্ডার দুর্গে বসেছে ব্যোমকেশের আসর, থুড়ি সেট। মে মাসের প্রচণ্ড গরমে সেখানেই চলছে শ্যুটিং। রোজ ২০০টারও বেশি সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠা... সব মিলিয়ে শ্যুটিংয়ের বাইরেও যেন এক গল্প লেখার মতোই অভিজ্ঞতা। এমনকি, যে দুর্গে শ্যুটিং চলছিল বিরসা দাশগুপ্ত (Birsa Dashgupta) পরিচালিত 'দুর্গরহস্য' ছবিটির, সেই দুর্গকে ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু গা-ছমছমে গল্পও। এবিপি লাইভের সঙ্গে সেই গল্প ভাগ করে নিলেন যিনি, তিনি পর্দায় ব্যোমকেশেরও গল্প বলেন, অজিত। অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য্য (Ambarish Bhattacharyya)।
মে মাসের গরমে শ্যুটিং চলছে মধ্যপ্রদেশে। অম্বরীশ বলছেন, 'মধ্যপ্রদেশে মে মাসের গরমে আমরা কেউ অভ্যস্থ নই। ভীষণ লু বইছে তখন। রোজ ২০০ থেকে ৩০০টা সিঁড়ি বেয়ে দুর্গে উঠতে হত আমাদের। তাপমাত্রা তখন প্রায় ৪৫-৪৬ ডিগ্রি। অত ওপরে এসি মেশিন বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, ফ্যান চালাতেও পারতাম না কারণ সেখানে তাতে আরও কষ্ট। সারাদিন ওই গরমের মধ্যেই শ্যুটিং চলত। প্রচণ্ড পরিশ্রমের ব্যাপার। তবে দুর্গটা এতটাই সুন্দর যে মাঝে মাঝে প্রকৃতিই চোখ ধাঁধিয়ে দিত আমাদের। আর ইউনিটটা ভাল হলে, কষ্ট করতেও ইচ্ছা করে।'
বিরসার সঙ্গে বাইরে একটা লম্বা আউটডোর শ্যুটিং, সঙ্গে রয়েছেন দেবও। ক্যামেরা বন্ধ হলে, কী হত অন্দরমহলে? অম্বরীশ বলছেন, 'দেবের সঙ্গে নয় নয় করে অনেকগুলো কাজই হয়ে গেল। ও ফ্লোরে থাকার সবচেয়ে ভাল বিষয়টা হল, কখনোই কিছু খুব সিরিয়াসলি নেয় না ও। হাসি, মজা করেই কেটে যায়। আর বিরসা মুম্বইতে কাজ করছে। ফলে ওখানকার ধারা অনুযায়ী, ও শিল্পীর যত্ন নিতে জানে। শ্যুটিং চলাকালীন কানে কানে এসে সহকারীরা বুঝিয়ে দিয়ে যেত পরিচালক কী চাইছেন। পরিচালক নিজে আসন থেকে চিৎকার করে বলতেন না। এই ব্যবহার টলিউডে প্রায় দেখাই যায় না।'
পুরনো দুর্গ.. দিনরাত শ্যুটিং। গা ছমছমে কোনও অভিজ্ঞতা হয়েছিল অম্বরীশদের? পর্দার অজিত বলছেন, 'রাতের অনেক দৃশ্য শ্যুটিং হয়েছে ওই দুর্গে। যেখানে শ্যুটিং হচ্ছে শুধু সেটুকু জায়গা আলো থাকলেও বাকি দুর্গ অন্ধকারে ডুবে থাকত। বেশ গা ছমছম করত কিন্তু। আর হ্যাঁ.. ওখানে শ্যুটিং করতে যাওয়ার আগে আমি বিভিন্ন জায়গায় ওই দুর্গটা নিয়ে গল্প পড়েছিলাম। সেখানেই একটা ঘটনার উল্লেখ ছিল, বছর ১০ আগে একটা বরযাত্রীর দল ওখানে গিয়েছিল। তারা আর ফিরে আসেনি। তারপর থেকে ওই দুর্গে আর কেউ যায়নি। ওখানে মাটির নিচে বেশ কয়েকটা তলা রয়েছে, সেগুলো গুপ্ত কক্ষ। কি আছে কেউ জানে না। বন্ধ বন্ধ দরজা আমরাও দেখেছি। ওর মধ্যেই কোনও এক ঘরে ওই বরযাত্রীর দলটা হারিয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে ওই দুর্গটা 'হন্টেড' হয়েই পড়ে রয়েছে। কেউ যায় না। সব মিলিয়ে এই গা ছমছমে অভিজ্ঞতাটা কিন্তু বেশ উপভোগ্য।'