মুম্বই: ভারতের প্রথম মহিলা বায়ুসেনা পাইলটের জীবনের ভিত্তিতে তৈরি ছবি ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’ নিয়ে মুখ খুললেন আসল গুঞ্জন। তাঁকে নিয়ে হওয়া ছবি সম্পর্কে নানা মহলে নানা আলোচনা কিছুদিন ধরেই চলছিল। কেউ বলছিলেন ছবিতে অত্যধিক মাত্রায় লিঙ্গবৈষম্যকে তুলে ধরা হয়েছে, আবার কারও অভিযোগ, ছবির স্বার্থে কার্গিল যুদ্ধের পরিস্থিতিকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। অনেকে আবার বলেছেন মূল মহিলা বৈমানিকের সঙ্গে ছবির প্রায় সাযুজ্যই নেই। আবার গুঞ্জনের সমসাময়িক এক মহিলা পাইলটও জানিয়েছেন, কার্গিল যুদ্ধে গুঞ্জন একা নন, তিনিও উপস্থিত ছিলেন শ্রীনগরে। কোনও কিছু আলাদা করে উল্লেখ না করেই সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে নিজের কথা বলেছেন আসল গুঞ্জন।


এই বায়ুসেনা অফিসার বলেন, ‘অনেকে বলেছেন ছবিতে আমার প্রকৃত রূপ দেখানো হয়নি। আমি যে রকম মানুষ সেটা ছবিতে ফুটে ওঠেনি। আমি বলতে চাই যে আমি আসল মানুষটা ছবিতে যে গুঞ্জনকে দেখানো হয়েছে, তার চেয়েও অনেক বেশি জেদি এবং লোহার চেয়েও মজবুত। আর এটাও সত্যি যে বায়ুসেনার পাইলট হিসেবে যে আট বছর আমি কাজ করেছি সে সময়ে আমার সহকর্মীদের থেকে সবসময় সহযোগিতা পেয়েছি, তাঁদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি এবং আমিও আমার সমস্ত সিনিয়র অফিসারদের সম্মান করেছি। জুনিয়াররাও আমায় ভালোবেসেছেন। খুব ভালো পরিবেশ পেয়েছি কাজ করার জন্য।’

প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে উড়ান সম্পর্কে আসল গুঞ্জনের বক্তব্য, ‘কমব্যাট জোনে যে আমিই প্রথম মহিলা হিসেবে যুদ্ধবিমান চালিয়ে নিয়ে যাই সে কথা তো লিমকা বুক অফ রেকর্ডেই আছে। আমি স্বল্পভাষী মানুষ। কিন্তু এখন যখন আলোচনা হচ্ছেই তখন বাধ্য হয়েই নিজের ঢাক নিজেকে পেটাতে হচ্ছে। আমার আগে পাহাড়, জঙ্গল, বরফের উপর দিয়ে বিপদসঙ্কুল আবহাওয়ায় আর কোনও মহিলা পাইলট এ ভাবে বিমান চালাননি। কার্গিল যুদ্ধে আমি যা করেছি সেটা তো বাস্তব ঘটনা।’

ছবিতে মহিলা অফিসারের প্রতি লিঙ্গবৈষম্যমূলক আচরণ দেখানো হয়েছে বলে যে অভিযোগ, সে ব্যাপারে গুঞ্জনের বক্তব্য, ‘ভারতীয় বায়ুসেনা অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ একটি বাহিনী। এখানে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ কোনও ব্যাপারেই কোনও বৈষম্যের মুখোমুখি আমায় কোনওদিন হতে হয়নি, বরং সকলের সাহায্যই পেয়েছি।’

পাশাপাশি তিনি অবশ্য একথাও বলেন, ‘মনে রাখতে হবে যে এটা আমার জীবনের ভিত্তিতে তৈরি একটা সিনেমা। এটা তো আর তথ্যচিত্র নয়। তাই ছবির স্বার্থে কিছু জায়গায় হয়তো গল্পকে অন্যভাবে বলতে চাওয়ার স্বাধীনতা নেওয়া হয়েছে।’