নয়াদিল্লি: ইরফান খান, ঋষি কপূরের মতো দুই তারকা অভিনেতার পরপর দুদিন মৃত্যুতে বলিউডের আকাশে হাহাকার। দুই স্টারের পরিবারেও স্বজনবিয়োগের যন্ত্রণা। তবে ঋষির তুলনায় ইরফানের ঘরে বেদনার ছায়া হয়তো একটু গাঢ়, কেননা মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে তাঁদের সংসারে মৃত্যু হানা দিয়েছে দুবার। প্রথমে শনিবার মারা যান ইরফানের ৯৫ বছরের মা, আর অভিনেতা চলে গেলেন গত বুধবার। মা, আর দাদাকে হারানোর যন্ত্রণা পাথরের মতো ভারী হয়ে চেপে বসে আছে ইমরান খানের বুকের ওপর। ইরফানের এই ভাই গত জানুয়ারি মাস পুরোটাই প্রায় অসুস্থ দাদার পাশে ছিলেন মুম্বইয়ে। তিনি এখন বলছেন, দিনকয়েক আগেই পৃথিবীকে বিদায় জানানো মায়ের কাছেই গিয়েছেন ইরফান।
শনিবার মায়ের মৃত্যুর পর লকডাউনের জন্য মুম্বই থেকে জয়পুরে তাঁর শেষকৃত্যে যেতে পারেননি ইরফান, ভিডিওতে মা-কে চিরবিদায় জানান। সেকথা উল্লেখ করে ইমরান বলেছেন, মনে হয় ভাইজান আমাদের মাকে চিরঘুমে শায়িত করার সময় যেতে পারেনি বলে এবার সোজা ওপরে তাঁর কাছেই চলে গেল। ও যেন বলত, ভেবো না,আমি ফিরে আসব।
মুম্বইয়ে একসঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে ইমরান বলেছেন, ও স্বাভাবিকই ছিল, ভালই চলছিল। মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর ও জয়পুর আসবে, কথা দিয়েছিল। মা, অন্যদের, আমাদের সবার জন্য খুব উদ্বেগ ছিল সবসময়।
বাবাকে হারিয়েছেন অনেক আগেই, এবার মা আর দাদার জোড়া মৃত্যুর আঘাত টালমাটাল করে দিয়েছে ইমরানকে। তিনি বলছেন, মনে পড়ছে, বাবা যখন মারা গেলেন, কীভাবে ইরফান দিল্লি গিয়ে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় (এনএসডি) ভর্তি হল। আমি এখানে একা পড়ে ছিলাম। এবার মা, ভাইও চলে গেল। আবারও আমি সেই একাই হয়ে গেলাম!
ইরফান ও তাঁর স্ত্রী সুতপার বন্ধুত্ব, প্রেম নিয়ে ইমরান বলেছেন, ভাইজান ভয়ে ভয়ে ঝুঁকি নিয়েই নিজে থেকে ওঁর সঙ্গে আলাপ করেছিল। সেই থেকে বন্ধুত্ব, তারপর বিয়ে।
ইরফান কোলন ক্যান্সার সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে ২ বছর লড়াই করে মারা গিয়েছেন বুধবার। তাঁর বিরল এক ধরনের রোগ হয়েছিল, যার চিকিত্সা পরিভাষায় নাম নিউরোএনড্রোক্রাইন টিউমার। মাত্র ৫৩ বছরে মকবুল, হায়দর, পিকু, লাইফ অব পাইয়ের মতো ছবিতে অভিনয় করা ইরফানের জীবনাবসানে শোকের ছায়া বলিউড সহ দেশের নানা মহলে।