কলকাতা: বিয়ের আগের রাত। ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে চমকে বিছানায় উঠে বসে ইন্দু। কে যেন দূর থেকে বলছে, দিদি.. তোর বরকে আমি নিয়ে যাচ্ছি। তোর আর সাতপাকে ঘোরা হল না।' ওয়েবসিরিজের প্রথম দৃশ্য। তারপরেই বিয়েবাড়ি, আয়োজন নতুন সেই সংসারে প্রত্যেকটা মানুষ যেন রহস্যময়। আর বাড়ির নতুন বউ কী সত্যিই শার্লক হোমস? উত্তর খুঁজতে খোদ ইন্দু ওরফে ইশা সাহার (Ishaa Saha) সঙ্গেই আড্ডা জমাল এবিপি লাইভ।


এর আগেও রুপোলি পর্দায় 'সোনাদা'-র অভিযানের সঙ্গী হয়েছিলেন ইশা। 'ইন্দু'-তে অভিনয় কতটা আলাদা? ইশা বলছেন, 'ইন্দু' -একটা পারিবারিক থ্রিলার। সোনাদার অভিযানের থেকে এই গল্পের প্রেক্ষাপট একেবারে আলাদা। সোনাদা আনেক বড় ক্যানভাসে আর অনেক বড় অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ। এখানে ইন্দু বাড়ির বউ, সে কোনও গোয়েন্দা নয়। অথচ তাঁর মনে প্রচুর প্রশ্ন। সে সব জানতে চায়, উত্তর খুঁজতে চায়।'


'প্রজাপতি বিস্কুট'-এর হাত ধরেই রুপোলি পর্দায় পথ চলা ইশার। সেখানেও শাওন শান্ত, মিষ্টি নতুন বউ। ঠিক 'ইন্দু'-র মতো? ইশা বলছেন, 'আমায় সাহানাদি (পরিচালক) যখন প্রথমদিন চরিত্রটা বুঝিয়েছিলেন, একটা কথা বলেছিলেন যে, ইন্দু শান্ত মেয়ে। কিন্তু ও এমন একটা চরিত্র যাকে কেউ চাইলেই মাড়িয়ে চলে যেতে পারবে না। ও কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়ে কথা বলবে। ইন্দু গোয়েন্দা নয়, কিন্তু ও কাজ করছে গোয়েন্দাদের মতোই। আর ও জানে কোথায় সাধারণভাবে কথা বলবে আর কোথায় গোয়েন্দাদের মতো। ইন্দু শান্ত, কিন্তু শান্ত মেয়েরা বিপজ্জনক হয়। সেটা সবাই জানে না। আমি নিজে শান্ত তো, আমি জানি।' কথাটা বলেই একঝলক হেসে ফেললেন ইশা। তারপর বললেন, 'শাওন আর ইন্দুর মধ্যে বিস্তর ফারাক। ভবিষ্যতে আমি হয়ত এমন অনেকগুলো নববধূর চরিত্র করব, তবে একেটার থেকে আরেকটাকে আলাদা করে পর্দায় তুলে ধরাই আমার কাজ। এতে এক্ষেত্রে অনেকটা সাহায্য করে চিত্রনাট্য। ওটা হাতে পাওয়ার পরেই আমরা কল্পনা করতে থাকি চরিত্রটা কেমন হবে।'


মাত্র ১৩-১৪ দিনে শেষ হয়েছিল 'ইন্দু'-র শ্যুটিং। কেমন অভিজ্ঞতা ছিল গোটা সিরিজের? ইশা বলছেন, 'এর আগে আমি অনেক ওয়েবসিরিজে কাজ করেছি, কিন্তু ইন্দু সবার থেকে আলাদা। বাংলায় আমার অনেক প্রিয় গোয়েন্দা রয়েছে। ফেলুদা আমাদের কাছে আবেগ। আর এখন তো পছন্দের তালিকায় সোনাদাও রয়েছে। তবে ভাবতে ভালো লাগছে, ইন্দু একটা মেয়ে। আগামী দিনে যখন বাংলা থ্রিলার বা ডিকেটটিভ গল্প নিয়ে কথা হবে, ওয়েবসিরিজের ইতিহাসে 'ইন্দু'-র নামটাও থাকবে। তবে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে হয়েছে। বেশি কিছু ভাবার ফুরসত ছিল না। আমার বিয়ে তাই অনেকবার পোশাক পরিবর্তন ছিল। আমি নিজে ওয়েবসিরিজ দেখা শেষ করেছি গতকাল। দেখে মনে হল, খাটনিটা বৃথা যায়নি।'


'হইচই'-র ওয়েব সিরিজে প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন ইশা। একটি নারীকেন্দ্রিক গল্প এবং পোস্টার জুড়ে কেবল ইশাই। হাসতে হাসতে অভিনেত্রী বলছেন, 'পোস্টার জুড়ে একা থাকতে কার না ভালো লাগে। আমারও লাগে। এটা প্রথম বুঝেছিলাম 'সোয়েটার'-এর সময়। একটা থ্রিল কাজ করে আর সেই সঙ্গে মনে হয়, এটা একটা বড় দায়িত্ব। মানুষ আমায় দেখে, পোস্টার দেখে, ছবিটা দেখতে আসবেন। ভালো লাগে, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এখন নারীকেন্দ্রিক ছবি হচ্ছে।'


নতুন ছবি 'ঘরে ফেরার গান'-এর শ্যুটিং শুরু হচ্ছে নভেম্বর মাসেই। ইশার সঙ্গে এই ছবিতে দেখা যাবে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। ডিসেম্বর মাসে 'কাছের মানুষ' ছবির শ্যুটিং শুরু। 'গোরা' মুক্তি পাচ্ছে ডিসেম্বরে। বছরের শেষেও এত ব্যস্ততা? হাসতে হাসতে অভিনেত্রী বললেন, 'এটাই তো ভালো। সবাই এখন কাজ করতে চাইছে। করোনা পরিস্থিতি পেরিয়ে আবার ছন্দে ফিরুক ইন্ডাস্ট্রি। এটাই একমাত্র চাওয়া এখন।'