কলকাতা: ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন সময় দেখেছেন, সংসার চালাতে আঁকড়ে ধরছিলেন সুরকে, গানকে। কলেজ জীবন থেকে যে লড়াই শুরু হয়েছিল, তাই যে এনে দেবে যশ, খ্যাতি, তা বোধহয় প্রথমে ভাবতেও পারতেন না তিনি। সময় গড়িয়েছে। সুরে পাড়ি দিয়েই তিনি পৌঁছেছেন টলিউড থেকে বলিউডে। জিতে নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষের মন।মেলোডি থেকে কমেডি, সব জঁ’রের গানেই তাঁর সমান যাতায়াত। তিনি জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আজ মুক্তি পেয়েছে ‘আবার বিবাহ অভিযান’। আর সেই কমেডি ছবির সুরে, আড্ডায় এবিপি লাইভের (ABP Live) মুখোমুখি জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Jeet Ganguly)। কখনও মেতে উঠলেন গানের ছন্দে, কখনও আবার সঙ্গীতশিল্পীর কথায় উঠে এল ছোটবেলার লড়াইয়ের কথা। ভাসালেন আবেগে.. গানে..


আজ মুক্তি পেয়েছে সৌমিক হালদার পরিচালিত ছবি আবার বিবাহ অভিযান (Abar Bibabo Obhijaan)। এই ছবিতে কেবল অভিনয় নয়, টাইটেল ট্র্যাক লিখেছেন ও গেয়েছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য (Anirban Bhattacharyya)। 'বিবাহ অভিযান' ছবিটির মতো তার সিক্যুয়ালেও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অভিনেতা যখন সঙ্গীতশিল্পীও, তাঁকে পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল জিৎ-এর? শিল্পী বলছেন, 'অনির্বাণের শিকড় থিয়েটারের মঞ্চে। সেখানে আগেও গান গেয়েছে ও। আর 'আবার বিবাহ অভিযান'-এর টাইটেল ট্যাকে আমার কেবল গান নয়, অনেকটা অভিনয়েরও দরকার ছিল। আমার মনে হয় অনির্বাণ আর দেবরাজ ছাড়া এটা আর কেউ পারত না। আমার পূর্বে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। সঙ্গীতশিল্পীদের ছবির অনুভূতি, গানের ভাষা বোঝাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। যেমন 'পরাণ যায় জ্বলিয়া রে' গানটার কথার টান আমি কাউকে বোঝাতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত নিজেই গাই। আমার এই গানটায় যে অভিনয়ের দরকার ছিল, সেটা ওরা পেরেছে।'


বলিউডে ফিরছে অভিনেতা অভিনেত্রীদের প্লেব্যাক গাওয়ার চল। সেই ছোঁয়া টলিউডেও। একাধিক বাংলা ছবিতে এখন শোনা যায় অভিনেতা অভিনেত্রীদের কন্ঠস্বর। সঙ্গীতশিল্পী জিতের চোখে এই ধারা কেমন? জিৎ বলছেন, 'অভিনয় আর গানের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। যাঁর রেওয়াজ থাকবে, আত্মবিশ্বাস থাকবে, প্রতিভা থাকবে, সে ভাল কাজ করবে। সেটা সঙ্গীতশিল্পীদের জন্যও ভাল, আমাদের জন্যও ভাল।'


মুম্বই আর কলকাতা, দু'জায়গাতেই দাপিয়ে কাজ করছেন জিৎ। মায়ানগরী আর তিলোত্তমার মধ্যে পার্থক্য কোথায়? একটু হেসে জিৎ বললেন, 'দুই জায়গাতেই গান তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমার পাল্লা সবসময় কলকাতার দিকেই ভারি থাকবে। তার কারণ আন্তরিকতা। মুম্বইতে সবকিছু ভীষণ প্রফেশনাল। এখানে আমরা সাক্ষাৎকারের বাইরেও আড্ডা মারি, গল্প করি। আমার কলকাতার ঝালমুড়ি ভীষণ প্রিয়। এখানে এসে যখন মিউজিক সিটিংয়ে বসি, ঠিক আমার জন্য ঝালমুড়ি চলে আসে। আমার তো এই ভালবাসা থেকেও গান আছে। আমার মনে হয়, গীটার বা পিয়ানো নিয়ে বসলেই গান হয় না। খুব ভাল বাসলে, উচ্ছ্বসিত হলেও আমার গান আসে। এসভিএফে এলাম আর আমার জন্য ডাবের জল চলে এল। এরপর মুড়ি, চানাচুর, সিঙ্গারা আসবে.... এই আন্তরিকতা আমি মুম্বই কেন, কলকাতার বাইরে আর কোথাও পাব না।'