সন্দীপ সরকার, কলকাতা: গুরুতর অসুস্থ কবীর সুমন (Kabir Suman Hospitalized)। তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, হৃদরোগের সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন কবীর সুমন। সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বিকেল পাঁচটায় সিসিইউ-তে রাখা হয় তাঁকে তিনি। ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডে রয়েছেন হৃদরোগ, ফুসফুস, মেডিসিন এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ।
কেমন রয়েছেন?
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সঙ্গীতশিল্পীর ফুসফুসে জল জমেছে। শ্বাসকষ্ট-ও রয়েছে তাঁর। হৃদযন্ত্রে সমস্যা ছাড়াও রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি কবীর সুমনের। হাইপারটেনশনের মতো সমস্যাও রয়েছে। এই সমস্ত নিয়েই আপাতত সিসিইউ-য়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে। তবে সূত্রের খবর, হাসপাতাল সুপারের কাছে স্যান্ডউইচ খেতে চেয়েছিলেন তিনি। সুপার অনুমতি দিয়েছেন।
অতীত...
এর আগে, ২০২১ সালের জুন মাসেও একবার শ্বাসকষ্ট নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এই বিশিষ্ট গায়ক-সঙ্গীতকার। সেবার ভোর রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসএসকেএম-এর উডবার্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেবার অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয় তাঁকে। জানা যায়, ৭২ বছরের এই প্রবীণ সংগীত শিল্পীর গলায় প্রবল ব্যাথা ছিল, কথা বলতেও কষ্ট ছিল তাঁর। র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়েছিল কবীর সুমনের। সেই টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও তাঁর আরটি পিসিআর টেস্ট করা হয়।স দিন বিকেলেই অসুস্থ সঙ্গীতশিল্পীকে দেখতে এসএসকেএমে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক অধ্যায়...
বামফ্রন্টের আমলে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন কবীর সুমন। জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে যাদবপুর লোকসভা আসন থেকে জিতেছিলেন। তাঁকে দলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে নিয়মিত দেখা যেত। কিন্তু কিছুদিন পর তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর। যদিও পরে সেই দূরত্বের অবসান ঘটে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখর হয়ে উঠেছিলেন কবীর সুমন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালেরই ২৩ জানুয়ারি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের বিরোধিতা করে কলকাতার গড়িয়াহাটে ধরনায় বসতে দেখা যায় তাঁকে। একুশের বিধানসভার নির্বাচনেও তৃণমূল কংগ্রেস তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কবীর সুমন। আদর্শ নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করলে কমিশনের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা শোনা যায় তাঁর মুখে। বলেন, ' নির্বাচন কমিশন হাস্যকর ফরমান জারি করেছে।' কমিশনের স্বাতন্ত্র্য বিপন্ন বলেও অভিযোগ ছিল তাঁর।