কলকাতা: সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি পর্বের তখনও কিছুটা বাকি, কাচের দরজা ঠেলে ঘরে প্রবেশ করলেন তিনি। কিছুটা গল্পের ছলেই। দীর্ঘ কেরিয়ার, কত টুকরো অভিজ্ঞতা... তাঁর গল্পের ঝুলিও তো বাড়ছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। ক্যামেরা সেট করতে করতেই গল্প শুরু করলেন। তারপর ক্যামেরা অন-অফ... সাক্ষাৎকার.. সবটাই গল্প। এবিপি লাইভের (ABP Live) সঙ্গে পর্দার 'টেনিদা' হয়েই তিনি গল্প শুরু করেছিলেন বটে, কিন্তু কথায় কথায় মিশে গেল 'টেনিদা' আর কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mallick)। 


আর একদিনের অপেক্ষা। পর্দায় টেনিদা হিসেবে তাঁকে দেখবেন দর্শক। কাঞ্চন বলছেন, 'সাক্ষাৎকার দিতে বসে একটা কথা খুব মনে পড়ছে। ২৬ বছর আগে জীবনে প্রথম আমি ক্যামেরার সামনে গিয়েছিলাম যে ধারাবাহিকটার জন্য, সেটা ছিল টেনিদা। গল্পটার নাম ছিল 'প্রভাতফেরি'। রাজা সেন পরিচালক ছিলেন। আমি অভিনয় করেছিলাম ক্য়াবলার ভূমিকায়। টেনিদার ভূমিকায় ছিলেন কৌশিক সেন (Kaushik Sen)। একটা পাইলট এপিসোড শ্যুটও হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটা টেলিকাস্ট হয়নি। ২৬ বছর বাদে আবার সেই টেনিদা।  তবে এবার নামভূমিকায় আমি। মনে হচ্ছে, একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।'


পর্দায় কাঞ্চন মানেই যেন দর্শকের মুখে লেগে থাকবে হাসি। অথচ মঞ্চে কাঞ্চন বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পর্দায় এক ধরনের চরিত্র পাওয়ায় আক্ষেপ রয়েছে কাঞ্চনের? অভিনেতা বলছেন, 'হ্যাঁ আক্ষেপ ছিল, তবে এখন নেই। এখন আমি 'রাজকাহিনী', 'শাহজাহান রিজেন্সি', 'মন্টু পাইলট'- থেকে অভিনয় করেছি। এখন মানুষ বোঝে কাঞ্চন মল্লিক শুধু হাসাতে নয়, অন্যান্য চরিত্রকেও ফুটিয়ে তুলতে পারে। সেই চেষ্টাটা এখন শুরু হয়েছে। ২৬ বছর বাদে টেনিদা করতে এসে আমি পোস্টার হলাম। ২৬টা বছর একটু বেশিই সময় বটে, তবে আমার কাছে বেটার লেট দেন নেভার। টেনিদার চরিত্রে সায়ন্তন ঘোষাল আমায় ভরসা করেছেন, সুরিন্দর ফিল্ম সুযোগ দিয়েছে, এটাই বা কম কী?'


যিনি দর্শককে হাসির রসদ দেন, তাঁর মনখারাপ হলে কী করেন? একটু হেসে কাঞ্চন বললেন, 'কাঞ্চন মল্লিকের মনখারাপ হলে 'সোনার কেল্লা' দেখে, 'গল্প হলেও সত্যি' দেখে, 'সাড়ে চুয়াত্তর', চ্যাপলিনের ছবি দেখে... মন ভাল হয়ে যায়। মনে হয়, কত কী করার আছে জীবনে। ওই সময়ে দাঁড়িয়ে, সীমিত জায়গায় তাঁরা যে সমস্ত কাজ করে গিয়েছেন, তার কাছে ভীষণ নগণ্য বলে মনে হয় নিজেদের। মনে হয়, করলাম টা কী এতদিনে.. কত কী বাকি!'